খালেদা হয়তো আর ভুল করবেন না

‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজের ভুল বুঝতে পেরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে ফিরে এসেছেন। ভবিষ্যতে হয়তো তিনি এ ভুল আর করবেন না।’ এমনটাই মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়েই হবে। আশা করি ওনি (খালেদা জিয়া) ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। গত নির্বাচনে আমরা সব দলকে অংশগ্রহণ করানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিনি (খালেদা জিয়া) আসেননি, সেটা অবশ্য তার ব্যাপার।’

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে যুবলীগ আয়োজিত ‘বাঙালি হৃদয়ের ফ্রেমে জাতির পিতা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠান ছিল। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন আশরাফ।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘৭০ সালের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু নেত্রকোনায় এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েছিলেন। আমি তখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। আমিও ওই সভা‍য় গিয়েছিলাম। সভা শেষে যখন রাত ৩টার দিকে ফিরে আসছিলাম সার্কিট হাউসে, তখন রাস্তায় গাছ ফেলা হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারলাম কুচক্রীমহল বঙ্গবন্ধুকে ঢাকায় ফিরতে না দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা তখন সবাই মিলে গাছগুলো সরিয়ে ফেললাম। পরে সার্কিট হাউসে আসলাম।’

আশরাফ বলেন, ‘ওই সময় তৎকালীন টেপুটি কমিশনারকে তলব করলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বললেন- আমি এখনই ইয়াহিয়ার সঙ্গে কথা বলবো। কমিশনার বললেন- এখন তো রাত ৩টা বাজে। তাছাড়া ইয়াহিয়া খান রাওয়ালপিন্ডিতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু বললেন- আমি এসব বুঝিনা। আপনি ব্যবস্থা করুন কথা বলার জন্য। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে কথা বলেন। তখন বঙ্গবন্ধু ফোনে বলছিলেন- আপনি কি পাকিস্তানে নির্বাচন চান কি চান না? আর যদি র্বিাচন চান তাহলে রাতে আমার যাওয়ার সময় গাছ ফেললেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইয়াহিয়া খান বললেন, নির্বাচন হবে। আপনি শান্ত হোন। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। ওই সময় বঙ্গবন্ধু যেভাবে কথা বললেন আমি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুবলীগকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যুবলীগ যে বইটি প্রকাশ করেছে, এটি চমৎকার একটি গ্রন্থনা। চমৎকার এডিটিং। যুবলীগের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এ বইটি সৃজনশীল। এ বইটি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে তারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবে। তাই আমি যুবলীগের কাছে আরেকবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

আশরাফ বলেন, ‘৭০ সালের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের এতো সদস্য ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগ ছিল সংগঠিত। ঘরে ঘরে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের দাওয়াত পৌঁছে দিতো ছাত্রলীগ। তাই নির্বাচনের প্রচারও করতে হয়েছে ছাত্রলীগকেই।’

যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিতি ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা, সংগঠনের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু, দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি এইএম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই