‘গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন’

বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ’ করা হচ্ছে অভিযোগ করে সরকারকে এই পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

একই সঙ্গে সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘আমি সরকারকে দমন-নিপীড়নের পথ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহবান জানাই। দমন-নিপীড়ন চালিয়ে মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে বিনা ভোটে এ সরকার ক্ষমতায় থাকার যে দিবা-স্বপ্ন দেখছেন তাতে করে তারা ক্রমাগতভাবেই জনগণের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘দেশে যে চরম রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে, সেখান থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সব দলের অংশগ্রহনে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি দ্রুত নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। সরকার আমাদের পুন: পুন: উত্থাপিত দাবির প্রতি কর্ণপাত না করায় জাতি ক্ষুব্ধ।’

‘একতরফা-ভোটবিহীন’ নির্বাচনে গঠিত সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে সংহত করতে গিয়ে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমুহকে তছনছ করে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি প্রধান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভের পরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে ৮৬ বছর বয়স্ক প্রবীন নেতা এম কে আনোয়ারকে ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলায় জামিন বাতিল করে কারগারে পাঠানো হয়েছে।

‘এ ঘটনা আমাদের মর্মাহত করেছে। দেশের একজন সম্মানিত প্রবীন নেতার প্রতি সরকারে এই আচরণ চরম অমানবিক, অসহিঞ্চুতার প্রমাণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।”

বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন তাঁর উপদেষ্টা বিশিষ্ট সাংবাদিক বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি শওকত মাহমুদকে গ্রেফতার করায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ‘সরকার যখন জাতীয় প্রেসক্লাবের মত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের যজ্ঞে লিপ্ত-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজকে স্তব্ধ করার জন্যই সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন।

বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘সরকারের অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে যখন বিএনপি প্রতিবাদ করছে এবং জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি থেকে এক চুলও সরে আসছে না; তখন সরকার সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসত্য, কাল্পনিক মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করছে, নির্যাতনও চালাচ্ছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে ন্যায়বিচার লাভের আশায় মিথ্যা, মামলায় জামিন পাওয়ার জন্য যখন বিচারকের কাছে আত্মসমর্পন করছেন, তখন জামিন না দিয়ে নেতা-কর্মীদের একের পর এক কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে।

এভাবে দেশে আইনের শাসন ভূলন্ঠিত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককেও কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এহেন অসহিঞ্চু মনোভাবের তীব্র নিন্দা করি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন অবিলম্বে এম কে আনোয়ার, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ ও দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকসহ আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে মিথ্যা সাজানো মামলায় কোন নেতা কর্মীকে হয়রানি না করারও জোর দাবি জানান।

বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে খালেদা জিয়া প্রতিশ্রুতি দেন, ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি কখনোই প্রতিশোধের পথ বেছে নেবে না। বরং জাতীয় ঐক্যের চেতনাকেই প্রাধান্য দেবে।



মন্তব্য চালু নেই