গত দুই বছরে ১০ বছরের কাজ করেছি : সাঈদ খোকন

গত দুই বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যত কাজ হয়েছে, তা ১০ বছরের সমান বলে দাবি করেছেন মেয়র সাঈদ খোকন। তবে যত কাজ হয়েছে তা একটি শহরকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি।

মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তির প্রক্কালে শনিবার নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন মেয়র খোকন।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে উত্তর সিটিতে মেয়র হিসেবে আনিসুল হক এবং দক্ষিণে জেতেন সাঈদ খোকন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৭ মে। আর দায়িত্ব গ্রহণের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির আগের দিন ‘এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ ঢাকা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন সাঈদ খোকন।’

দুই বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে মেয়র খোকন বলেন, ‘এই সময় একটি শহরকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য কিছুই নয়। তবে এটা একেবারে ছোট সময় নয়, একজন মেয়রের দায়িত্ব পালনের ৪০ ভাগ সময় এটা।’

সাঈদ খোকন বলেন, ‘দায়িত্বভার গ্রহণ করার সময় নগরীর রাস্তাঘাট ছিলো ভাঙাচোরা, সড়ক বাতির অবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। বাজেট বহির্ভূত ব্যয়ের কারণে ঠিকাদারদের বহু বিল বকেয়া ছিল, এ রকম একটি প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব নেয়ার পর সকলের সহযোগিতায় ঢাকা শহরের পরিবর্তন হয়েছে।’

নগর উন্নয়ন করতে গিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি-ধমকির পরও নিজের লক্ষ্য থেকে সরে আসেননি উল্লেখ করেন সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ফুটপাতে চলাচলের জন্য গুলিস্তান, মতিঝিল, নিউমার্কেটের ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে। এই কাজ করতে গিয়ে নানাবিধ হুমকি-ধমকি, প্রতিরোধ এসেছে। কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করিনি।’

মেয়র বলেন, কর্মদিবসে ‘অফিস আওয়ারের’ পরে হকারদের ফুটপাতে বসার অনুমতিদানের জন্য সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন দিলকুশা, নবাবপুর রোড, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন স্থান, সেগুনবাগিচা ও বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় পাঁচটি হলিডে মার্কেট চালু করা হয়েছে।

ঢাকার দুই সিটির মধ্যে কোন করপোরেশন কাজে এগিয়ে-এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘ডকুমেন্ট আপনাদের হাতে দিয়েছি, এই ডকুমেন্টে যদি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পিছিয়ে থাকে, জনগণ যেটা বলবে, সেটা আমি মেনে নেব। কোথায় কোন কাজ করেছি, নগরের কোথায় কোন উন্নয়ন হয়েছে টোটাল ডকুমেন্ট আপনাদের হাতে। এগুলো দেখে যদি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পিছিয়ে থাকে মনে হয়, তাহলে যা বলবেন মেনে নেব।’

শান্তিনগরের জলাবদ্ধতার জন্য ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ ৮০ ভাগ সমাপ্ত হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আগামী জুন-জুলাইয়ের বর্ষায় শান্তিনগরে কোন ধরনের জলাবদ্ধতা হবে না। এখন একটা ভারী বর্ষণ হলেই বিষয়টি দৃশ্যমান হবে।’

মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের কারণে নগরবাসীর ভোগান্তির দায় মেয়র হিসেবে এড়াতে পারেন কি না- জানতে চাইলে সাঈদ খোকন বলেন, ‘এই ফ্লাইওভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের একটা দুর্বলতা থাকতে পারে। তবে জুলাই-আগস্ট নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রকল্পটি এলজিআরডির, এখানে সিটি করপোরেশনের তেমন কিছু করার থাকে না।’

রাজধানীতে শব্দ দূষণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘রাজধানীতে শব্দ দূষণের ব্যাপারটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ দেখে। বিদেশে হর্নকে গালি/বকা হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কিন্তু আমাদের দেশে এটা সব সময় ব্যবহার করা হয়। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক বিভাগ ও পরিবেশ বিভাগ কাজ করে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মো. বিলাল, সচিব খান মো. রেজাউল করিম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই