গভীর সাগরে ইলিশ আহরণের অনুমতি দিয়েছে বন বিভাগ

একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে পূর্ব সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ শিকারসহ বনজ সম্পদ আহরণে সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত গভীর সাগরে ইলিশ আহরণের অনুমতি দিয়েছে বন বিভাগ।

দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনে পাস-পারমিট বন্ধ থাকার পর ইলিশ আহরণের অনুমতি পাওয়ায় খুশি উপকূলের জেলে-মহাজনরা। মংলাসহ আশপাশের উপকূলীয় জেলেরা আজ রোববার সকাল থেকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন বিভিন্ন স্টেশন অফিসগুলো থেকে নৌকা ও ট্রলারসহ নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব জমা দিয়ে ইলিশ মাছ আহরণের অনুমতিপত্র (বিএলসি) সংগ্রহ করতে শুরু করেছে। তবে ইলিশ আহরণের জন্য স্টেশন অফিস থেকে বিএলসি (অনুমতি) নেওয়া জেলেরা বঙ্গোপসাগর ছাড়া সুন্দরবনের কোনো নদী-খালে কোনো প্রজাতির মাছ শিকার ও বনজ সম্পদ আহরণ করতে পারবে না। এমনকি বিএলসিপ্রাপ্ত জেলেদের নৌকা বা ফিশিং ট্রলারে ইলিশ ছাড়া অন্য কোনো মাছ ধরার জালও সুন্দরবনে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, আজ থেকে ইলিশ মাছ আহরণের জন্য জেলেদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তারা আগামী তিন মাস শুধু বঙ্গোপসাগর থেকেই ইলিশ মাছ আহরণ করবে। এসব জেলে সুন্দরবনের কোথাও কোনো ধরনের মাছ শিকার করতে পারবে না। কেউ যদি সাগরে ইলিশ আহরণের পাস নিয়ে সুন্দরবনে ইলিশ কিংবা অন্য কোনো মাছ ধরার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাইদুল ইসলাম আরো বলেন, সুন্দরবনে যাওয়া জেলেরা জাতিসংঘের ইউনেস্কো ঘোষিত তিনটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইড, ডলফিন রক্ষায় তিনটি এলাকার ৩১ দশমিক ৪ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এবং সুন্দরবনে মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণে সারা বছরজুড়ে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ এমন ১৮টি নদী-খালেও ইলিশ আহরণ করতে পারবে না।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ জানায়, চলতি বছরের ২৭ মার্চ, ১৩ এপ্রিল, ১৮ এপ্রিল ও ২৭ এপ্রিল পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন এলাকায় ৪ দফা নাশকতার আগুনে বন পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরিকল্পিত এই সব অগ্নিকাণ্ডের পর ২৮ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে সব ধরনের সম্পদ আহরণে পাস-পারমিট বন্ধ করে দেয় বন বিভাগ। এই সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণার দীর্ঘ ৩৭ দিন পর শুধু বঙ্গোপসাগরে রুপালি ইলিশ মাছ শিকারের জন্য জেলেদের অনুমতি দিয়েছে বন বিভাগ।



মন্তব্য চালু নেই