গরু বলে মহিষের মাংস বিক্রি : ২২ জনের দণ্ড

রাজধানীর মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচাবাজারে মহিষের মাংসকে গরুর মাংস ও ছাগলের মাংসকে খাসির মাংস নামে বিক্রির অভিযোগে ৭ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যামাণ আদালত। এছাড়া ঢাকা উদ্যানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ইফতারি তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে দুটি কারখানার মোট ১৫ জনের জেল-জরিমানা প্রদান করে আদালত।

রোববার সকাল সাড়ে ১ টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব-২।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাব-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র এএসপি মো. মাহমুদুর রশীদ, এএসপি রবিউল ইসলাম। এছাড়াও বিএসটিআই এর ফিল্ড অফিসার সিকান্দার মাহমুদ ও হারুন অর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সারাদেশে মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সুযোগ নিয়ে ওজনে কম দেয়া, দেশি দাম নেয়া, মহিষের গোশতো গরুর বলে বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ভোক্তাদেরকে প্রতারিত করা হচ্ছে।

রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের বিভিন্ন মাংসের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা পরিচালনাকালে দেখা যায়, বিভিন্ন মাংসের দোকানে বিএসটিআই’র মেজারিং ডিভাইস দ্বারা পরিমাপক যন্ত্র পরীক্ষা করে দেখা যায়, ক্রেতাদেরকে ওজনে গোশতো কম দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও মহিষের মাংসকে গরুর মাংস এবং ছাগলের মাংসকে খাসির মাংস বলে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ অপরাধের কারণে গোলাম মর্তুজা মাংসের দোকানের মো. ইকবাল কোরাইশী(৪৫) কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড; জনপ্রিয় খাসির মাংসের দোকানের কাউসার (৩২) কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড; বিসমিল্লাহ খাসির মাংসের দোকানের আনোয়ার হোসেন (৪৫) কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড; বাবা-মায়ের দোয়া মাংসের দোকানের মো. জনি (২৬) কে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড; আলী মাংসের দোকানের মো. আবেদ (৩০) কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদণ্ড; কোরাইশী মাংসের দোকানের মো. রফিক (২৬) কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদণ্ড; ভান্ডারী মাংসের দোকানের মো. সেলিম(৪৩) কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অন্যদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান এলাকায় খুলনা ফুড প্রোডাক্টস ও বিসমিল্লাহ আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযান পরিচালনা করেন। খুলনা ফুড প্রোডাক্টস কারখানায় বিএসটিআই এর অনুমোদন ব্যতীত লেভেল ছাড়া মিষ্টি, দই, চানাচুর সহ অন্যান্য বেকারি খাদ্য প্রস্তুত করা, কাঁচা মাংসসহ পেস্টি কেক একই ফ্রিজে রাখা; পচা ও পোকাযুক্ত ডিম ব্যবহার করে খাবার তৈরি করা; খোলা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ইফতারি খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করা; কারখানার ভিতরে টয়লেট ব্যবহারসহ কর্মচারীদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ অপরাধে খুলনা ফুড প্রোডাক্টস এর মো. মিরাজুর রহমান (২৮), জয়নাল আবেদীন (৩৫), মো. হানিফ (৫০), রহমত উল্লাহ (৩২) ও মো. মিনার (২২) দেরকে ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য আইনে ৭ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে প্রত্যেককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

বিসমিল্লাহ আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযানকালে দেখা যায় বিএসটিআই এর অনুমোদনবিহীন আইসক্রিম কারখানায় শিল্প-কারখানা ও কাপড়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরণের রং, সেকারিন, কৃত্রিম সুগন্ধি, এ্যারারুট ও ট্যাপের অনিরাপদ পানি দিয়ে আইসক্রিম তৈরি করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির মো. আবদুল হাকিম(২৯), আবদুর রহমান (৩০) ও মো. কবির হোসেন(২৭) দেরকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে প্রত্যেককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।



মন্তব্য চালু নেই