গর্ভধারণের পূর্বে অবশ্যই করিয়ে নিন এই পরীক্ষাগুলো

প্রতিটি নারীর জন্য অনেক কাঙ্ক্ষিত একটি মুহূর্ত হল মা হওয়া। মা হওয়ার অনুভূতির সাথে আর কোন অনুভূতির তুলনা হয় না। সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। একটি নতুন প্রাণ নিজের ভেতর তৈরি হওয়ার অনুভব সব অনুভূতির উপরে। কিন্তু গর্ভ ধারণের এই সময়টুকুতে নারীদের কিছু শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যাগুলো সাধারণত জীবনযাপনের ধরন, জিনগত কারণ, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক টেনশন ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। গর্ভধারণের সময় এইসব জটিলতা এড়াতে গর্ভধারণের আগে কিছু পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।

১। রক্ত পরীক্ষা

রক্ত পরীক্ষা অন্যান্য সব পরীক্ষার আগে করানো উচিত। সাধারণত ছয় ধরণের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট), সিফিলিস, এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি, রুবিলা ভাইরাস, ব্লাড গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি, ব্লাড গ্লুকোজ অব্যশই করানো উচিত।

২।থাইরয়েডের পরীক্ষা

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হল থাইরয়েড পরীক্ষা।অনেকেই এটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। অথচ থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণের কারণে হতে পারে গর্ভপাত! অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণকে বলা হয় ‘হাইপার থাইরয়েডিজম’। এর কারণে সন্তান আগাম জন্ম হতে পারে। যদি কম হাইপোথাইরয়েডিজম হয়, তার কারণে নবজাতকের মস্তিষ্কে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৩। ইউরিন বা প্রস্রাবের পরীক্ষা

আজকাল অনেকে শিশু জন্মের পর ডায়াবেটিস দেখা দেয়। মূলত মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে শিশু মাঝেও এটি দেখা দিয়ে থাকে। প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে শর্করার পরিমাণ, প্রোটিনের পরিমাণ, কোন প্রকার ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন আছে কিনা তা জানা যায়। যদি রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে, তবে গর্ভধারণের আগে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নিতে হবে।

৪। স্মিয়ার (Smear) টেস্ট

জরায়ুমুখ, পেলভিক, যোনির এলাকা পরীক্ষা করাকে স্মিয়ার পরীক্ষা বলা হয়। গর্ভকালীন সময়ে স্বাস্থ্যগত সমস্যা এড়ানোর জন্য এই পরীক্ষাগুলো করানো হয়। আপনার যোনী বা জরায়ু এলাকায় কোন ইনফেকশন আছে কিনা তা জানা যায় এই স্মিয়ার পরীক্ষার মাধ্যমে।

৫। সিমেন এনালাইসিস (শুক্রাণু বিশ্লেষণ)

এই পরীক্ষাটি ছেলেদের করানো হয়ে থাকে।এ ই পরীক্ষার মাধ্যমে শুক্রাণু গণনা, শুক্রাণুর প্রকৃতি, অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। যেসকল ছেলে ধূমপান, মদ্যপান করে থাকে এবং যাদের কোন জিনগত সমস্যা আছে তাদের এই পরীক্ষা অব্যশই করানোউচিত।

৬। এক্স-রে ,আলট্রাসনোগ্রাম করা

গর্ভধারণের আগে বুকের এক্স-রে, পেটের আলট্রাসনোগ্রাম করে নেওয়া ভাল। অনেক সময় বুকের এক্স-রে বা পেটের আলট্রাসনোগ্রামে এমন কোন সমস্যা ধরা পড়ে যা আগে আপনি জানতেন না। এছাড়া ব্লাড প্রেসারটা পরীক্ষা করে নিতে হবে।অনেক সময় গর্ভকালীন সময়ে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে, যা নিয়মিত চেকাআপ আর ঔষধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

৭। রুবেলা রক্ত পরীক্ষা

এটি এক ধরণের রক্ত পরীক্ষা।এই পরীক্ষার মাধ্যমে রক্ত রুবেলা ভাইরাস চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তিতে অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা হয়।গর্ভকালীন সময়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুর হার্টের সমস্যাসহ আরো নানা শারীরিক সমস্যা দেয়।



মন্তব্য চালু নেই