গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা কোথায় যাবেন?

গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ধসে পড়েছে দোকানগুলো। যারা কিছু মালপত্র সরাতে পেরেছেন, তারা কিছু ক্ষতি হয়ত লাঘব করতে পেরেছেন। অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা এখন নিস্তব্ধ হয়ে গেছেন তাদের দোকান, মালামাল ও পুঁজি হারিয়ে। এদের অনেকের দেনা আছে, লাখো কোটি টাকা ঋণ আছে। গত মঙ্গলবার এ ভয়বাহ অগ্নিকাণ্ডের পর তারা পুনরায় সেখানেই ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ডিএনসিসি কিচেন মার্কেট ট্রেডারস এ্যাসোসিয়েশন এবং ডিএনসিসি পাকা মার্কেট ট্রেডারস এ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা ধসে যাওয়া এ মার্কেট ছেড়ে যাবেন না। বছরের পর বছর ধরে তারা এখানেই তাদের রুটি রুজি গড়ে তুলেছেন। ইতিমধ্যে তারা সমাবেশ করে দাবি জানিয়েছেন, পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা তাদের মার্কেট ছেড়ে কোথাও যাবেন না। ব্যবসায়ী নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে তারা পুনর্বাসনের সুযোগ পান।

ডিএনসিসি কিচেন মার্কেট এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শের মুহাম্মদ বলেছেন, ব্যবসায়ীরা পারর্কিং লটে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা করবেন, এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলবেন। এর আগে ডিএনসিসি পাকা মার্কেটের সভাপতি এস এম তালাল রিজভি আগামী শুক্রবার মার্কেট পরিস্কারের কাজ শুরু করা হবে। যদিও মার্কেটটি পুরোপুরি ধসে যায়নি, তাই যেসব দোকান খোলা সম্ভব হবে, তা খোলা হবে।

কিচেন মার্কেটের ছাদে গর্ত করে পাম্প করে পানি নিক্ষেপের সাহায্যে আগুন নেভানো হয়েছে। একাজে অন্তত ১’শ দমকল কর্মী অংশ নেয়। দমকল বাহিনীর প্রশিক্ষণ পরিচালক লে:কর্নেল মোশাররফ হোসেইন সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে মার্কেট দুটি পরিদর্শন করেছেন। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করছে তদন্ত কমিটি। মার্কেট দুটির নিরাপত্তা ও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কেট পরিদর্শন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের বিষয়টি ওবায়দুল কাদের বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

গুলশান কিচেন ও পাকা মার্কেটের স্থলে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ নিয়ে মামলা চলছে। ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা যত দ্রুত করা সম্ভব হবে তত শীঘ্রই এ সংকট নিরসনের একটা উপায় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে মেয়রের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। মহাখালীতে বস্তীতে আগুন লাখার পর বেশ কয়েক’শ বাড়ি ঘর পুড়ে খোলা আকাশের নিচে বস্তীবাসিরা দাঁড়ালে মেয়র আনিসুল হকের উদ্যোগে সেখানে ফের নতুন ঘর তোলা সম্ভব হয়েছে। ব্রাক সহ দেশি বিদেশি সাহায্য সংস্থা এগিয়ে এসেছেন। গুলশানে মার্কেট আগুন লাগার পর ব্যবসায়ীরা তাদের পুঁজি ও মালামাল হারিয়েছেন। অনেকে মালামাল বিক্রির টাকা পর্যন্ত ক্যাশ থেকে সরাতে পারেননি এবং আগুনে তা পুড়ে গেছে। মেয়র আনিসুল হকের কার্যকর উদ্যোগ এক্ষেত্রে খুবই জরুরি।



মন্তব্য চালু নেই