গেঁটে বাত থেকে পরিত্রাণের সহজ উপায়

আরথ্রাইটিসের একটি ধরণ হচ্ছে গেঁটেবাত যা শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন- কান, হাতের ছোট ছোট অস্থি সন্ধিতে, কব্জিতে, গোড়ালি বা হাঁটুতে হয়। গেঁটেবাত হলে তীব্র ব্যথা, ফুলে যাওয়া, তীব্র আবেগ প্রবণতা এবং প্রদাহ ইত্যাদি উপসর্গ গুলো প্রকাশ পায়।

গেঁটেবাত হওয়ার সঠিক কারণ এখনো অজানা তবে শরীরে অধিক পরিমাণে ইউরিক এসিড এর একটি কারণ। অন্য সম্ভাব্য কারণ হল জিনগত, অত্যধিক পরিমাণে অ্যালকোহল সেবন, শরীর চর্চার অভাব, অত্যধিক প্রোটিন গ্রহণ এবং অনেক বেশি মানসিক চাপে ভোগা ইত্যাদি।

অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার সাথেও গেঁটেবাত সম্পর্কিত যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কিডনিতে পাথর ইত্যাদি, তাই এর সঠিক চিকিৎসা করানো উচিৎ। এছাড়াও ঘরোয়া কিছু সহজ উপায়ে নিরাময়কে ত্বরান্বিত করা ও উপসর্গের উপশম করা যায়। আসুন তাহলে জেনে নেই কী কী ঘরোয়া প্রতিকার আছে তা।

১। আপেল সাইডার ভিনেগার

আপেল সাইডার ভিনেগার যা মাথাব্যাথা ও পাকস্থলীর এসিড এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় তা গেঁটেবাত ও আরথ্রাইটিসের চিকিৎসায় ও সহযোগিতা করে। আপেল সাইডার ভিনেগারের অম্লতা তীব্র ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আপনি এর সাথে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন তাহলে শরীরের প্রদাহ রোধী প্রতিক্রিয়া উদ্দীপিত হবে।

· ১ গ্লাস পানিতে ১ চামুচ কাঁচা ও অপরিশুদ্ধ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশান।

· দিনে দুই থেকে তিন বার পান করুন

যদি এটা সেবন করে উপকৃত হন তাহলে আপেল সাইডার ভিনেগারের পরিমাণ বাড়িয়ে ২ টেবিল চামচ করতে পারেন।

২। আদা

আদাতে প্রদাহরোধী উপাদান আছে যা ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং পরিণামে গেঁটেবাত প্রতিরোধে সাহায্য করে।

· সম পরিমাণ শুকনো আদা গুঁড়া, মেথি গুঁড়া এবং হলুদ গুঁড়া ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন।

· মিশ্রণটির ১ চামচ গরম পানির সাথে মিশিয়ে দিনে দুই বার পান করুন।

· নিয়মিত সেবন করলে গেঁটেবাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।

৩। লেবুর রস

গেঁটেবাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শরীরকে অ্যাল্কালাইজ করা এবং রক্ত প্রবাহ থেকে অতিরিক্ত ইউরিক এসিডকে নিষ্ক্রিয় করা প্রয়োজন। লেবুর রস ও বেকিং সোডা এটি করতে সক্ষম। শরীরের টিস্যুর শক্তি বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খান।

· ১ টি লেবুর রসের সাথে আধা চা চামুচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন।

· মিশ্রণটি ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে অবিলম্বে তা পান করুন।

· এছাড়াও ১ গ্লাস পানিতে ১টি লেবুর অর্ধেক অংশের রস মিশিয়ে দিনে তিনবার পান করুন।

টিপস :

· যদি ব্যথা খুব বেশি না হয় তাহলে জয়েন্টের মধ্যে ঠান্ডা প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এতে প্রদাহ ও ব্যাথা কমতে সাহায্য করবে। দিনে কয়েকবার করে জয়েন্টের মধ্যে বরফ লাগান।

· ব্যাথা করলে বিশ্রাম নিন যতক্ষণ পর্যন্ত না ব্যথা কমে যায়। শোয়ার সময় জয়েন্টের স্থান গুলো উপরে দিকে উঠিয়ে রাখুন, এজন্য হাত বা পা নরম বালিশের উপর রাখুন।

· যদি পানি কম খাওয়া হয় তাহলে শরীরে ইউরিক এসিডের স্তর যতটুকু আছে তাঁর চেয়ে বেড়ে যেতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীরের ইউরিক এসিডের মাত্রা স্থির থাকে।

· আপনি কী খাচ্ছেন বা কী পান করছেন সেই বিষয়ে নজর দিন। উচ্চমাত্রার পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- সামুদ্রিক খাদ্য, লিভার এবং চর্বি যুক্ত খাবার ইত্যাদি রক্তের ইউরিক এসিডের পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দেয়। ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ মিষ্টি পানীয় এবং এলকোহল ও একই কাজ করে।

· কলাতে উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম থাকে যা ইউরিক এসিডের স্ফটিককে তরলে পরিণত করে এবং মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বাহির করে দেয়। কলাতে ভিটামিন সি ও থাকে যা ফোলা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১/২ টি কলা খান অচিরেই আপনার শরীরের উন্নতি লক্ষ্য করবেন।

· গেঁটে বাত থেকে মুক্তির জন্য প্রতিদিন ১টি আপেল খেতে পারেন।



মন্তব্য চালু নেই