গ্রামে গ্রামে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই তুঙ্গে

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই এখন গ্রামে গ্রামে। প্রথমবারের মত দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান পদে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনকে ঘিরে চায়ের কাপে ঝড় উঠছে।

প্রথম দফার নির্বাচনের প্রার্থীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কারণ ২২ মার্চ ভোট। আর এজন্য ৭৩২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট ৩ হাজার ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এ প্রতিযোগিতা শুধু চেয়ারম্যানের মধ্যেই সীমাবন্ধ নেই। সংরক্ষিত আসনের মহিলাসহ মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে অভিযোগ রয়েছে মিছিল, শোডাউন জমায়েত পথসভা ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকের উপর হামলা-হুমকির মত ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এদিকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়া বিএনপি এখন মরিয়া। তারা জয়ী হয়ে প্রমাণ করতে চাচ্ছে সরকারের জনপ্রিয়তা নেই। অন্যদিকে, সরকারি দলের প্রার্থীরাও তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রধান দু’টি দল ও জোটই ইউপি নির্বাচনে জয়ী হয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলও মাঠে রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ বিএনপির মত তারা সক্রিয় নয়।

এ বিষয়ে জামালপুর জেলার মেলান্দহের মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী নূরে আলম তালুকদার রুনু বলেন, সরকারি দলের প্রার্থী বিভিন্নভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে। কিন্তু ইসি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আর বিএনপির প্রার্থীদের হয়রানিও করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হবে না। বিএনপিই জিতবে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা কোন প্রার্থী কোন দলের সেটা বিচার করি না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

আমাদের সিলেট প্রতিনিধি ছামির মাহমুদ জানিয়েছেন সেখানকার সদর উপজেলার ৮ ইউনিয়নে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রার্থীরা যাচ্ছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে। ভোটারদের যেখানেই পাচ্ছেন সেখানেই হাত মেলাচ্ছেন ও নিজের প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন। নির্বাচনী এ দৃশ্য এখন উপজেলার আট ইউনিয়নে। অপরদিকে, প্রচারণায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।

এদিকে, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। ভোট কেটে নেয়ার আশংকা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দলটির জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২২ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য মণিরামপুরের ১৬টি ইউনিয়নের নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী দেয়া হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করছি অধিকাংশ ইউনিয়নে বিএনপির দলীয় প্রার্থী এবং তার কর্মীদেরকে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে বাধা দেয়া হচ্ছে। কোনো কোনো প্রার্থী ও তার কর্মীকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়াও হচ্ছে।

ইউপি নির্বাচনে বিনা ভোটে আওয়ামী লীগের ৬২ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তারিখ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ আগে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে।

এ হিসেবে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে সবগুলো ইউপির নির্বাচন শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই সবগুলো ইউনিয়ন পরিষদকে পর্যায়ক্রমে ভোটের ব্যবস্থা করছে নির্বাচন কমিশন।



মন্তব্য চালু নেই