ঘাত-প্রতিঘাতেও মাকে ভেঙ্গে পড়তে দেখিনি : প্রধানমন্ত্রী

‘আমার মা’র জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে। কিন্তু মাকে কখনো ভেঙ্গে পড়তে দেখিনি। কখনো দেখিনি বাবাকে বলেছেন, রাজনীতি ছেড়ে দাও। কখনো না। কোনো প্রয়োজনেও আমার বাবাকে বিরক্ত করেননি তিনি। মেয়েদের অনেক আকাঙ্খা থাকে, শাড়ি, গহনা, গাড়ি-বাড়ি। কিন্তু কখনো তিনি মুখ ফুটে কিছু বলেননি।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এভাবেই স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশভাগ থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ-তিতীক্ষায় বঙ্গমাতার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এভাবেই বর্ণনা করেন তার বড় মেয়ে শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিচারণমূলক বক্তৃতার সময় ওসমানী মিলনায়নে পিনপতন নিস্তব্ধতা বিরাজ করছিল। অধীর আগ্রহে অতিথিরা শুনছিলেন মহীয়সী নারী ফজিলাতুন্নেছার না জানা অনেক কথা।

‘স্বামীকে কম সময় তিনি (বঙ্গমাতা) কাছে পেতেন। আমার বাবার জীবন যদি দেখি, কখনো একটানা দুটি বছর আমরা বাবাকে কাছে পাইনি। স্ত্রী হিসেবে আমার মা ঠিক সেইভাবে বঞ্চিত ছিলেন। কিন্তু কখনো, কোনোদিন তিনি অনুযোগ-অভিযোগ করতেন না,’ বলেন শেখ হাসিনা।

‘তিনি (মা) বিশ্বাস করতেন তিনি (বঙ্গবন্ধু) দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করছেন। সেই সময় আমার দাদা সব টাকা আমার মাকে দিতেন। মা একটি টাকাও নিজের জন্য জমিয়ে রাখতেন না। তিনি তার অংশটুকু, নিজেকে বঞ্চিত করে, আমার বাবাকে দিতেন,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের ওপর নেমে আসা পাকিস্তানী শাসকদের জুলুম-নির্যাতনের কথাও বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা। আগুণ ঝরা সেই দিনগুলোতে দেশের মানুষের জন্য বঙ্গমাতার ত্যাগের কথাও বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা।

‘আমার মা অনেক ধৈর্য ধরে পরিবার সামলাতেন। এমনো দিন গেছে যে বাজার করতে পারেননি। আমাদের কিন্তু বলেননি, আমার টাকা নাই। চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে আচার দিয়ে বলতেন, চলো আমরা গরীব খিচুড়ি খাব। অভাব-অনটনের কথা, হা- হুতাশ কখনো তার মুখে শুনিনি,’ এভাবেই বঙ্গমাতার কথা বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বড় মেয়ে হিসেবে আমিই কিন্তু ছিলাম তার (বঙ্গমাতা) সব থেকে আপন। তিনি প্রতিটি পদে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখেন।’



মন্তব্য চালু নেই