ঘুপচি বিজ্ঞাপন : ফেঁসে যাচ্ছেন তিন পত্রিকার কর্মকর্তা

টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল দেশের তিনটি জাতীয় পত্রিকায়। কিন্তু ওই তিন পত্রিকার বিজ্ঞাপন ম্যানেজাররা ডিএনসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তার যোগসাজশে পত্রিকার নামমাত্র কয়েকটি কপিতে ওই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এই ‘ঘুপচি’ বিজ্ঞাপন প্রকাশের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আর তাই দৈনিক জনতা, দি ডেইলি নিউ নেশন ও দৈনিক ভোরের ডাকের তিন ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিতে যাচ্ছেন দুদকের অনুসন্ধানী কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক এএসএম সাজ্জাদ হোসেন।

দুদক সূত্র জানায়, গত ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি নালা সংস্কার কাজের জন্য একটি টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির নোটিশ করে ডিএনসিসি। প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের এই টেন্ডার দাখিলের শেষ সময় ছিল ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি। মিরপুর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ডিএনসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনের কাছে পাঠান। পরে ৫ জানুয়ারি তারিখে দৈনিক জনতা এবং ৭ জানুয়ারি দি ডেইলি নিউ নেশন ও দৈনিক ভোরের ডাকে প্রকাশিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। পরে ‘ঘুপচি’ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সেই অভিযোগ দুদকে এলে তা আমলে নিয়ে অনুসন্ধানে নামে সংস্থটি।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অফিসের মাত্র কয়েকটি কপিতে শুধু বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছিল। সারা দেশে বিক্রির জন্য ছাপানো কোনো কপিতেই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি তারা ছাপেনি। এর কারণ জানতে চাইলে পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপনের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজাররা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

অপরদিকে জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনকে বিজ্ঞাপন প্রচারের নির্ধারিত হারে টাকাও দিয়েছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান। কিন্তু ওই তিন পত্রিকার বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের যোগসাজশে ‘ঘুপচি’ বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়েছিল বলে দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দুদক কর্মকর্তা বলেন, ‘সেই বিজ্ঞাপনে কত টাকা লেনদেন হয়েছিল তা জানতে ডিএনসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর চিঠি দিয়েছিল ওই অনুসন্ধানী কর্মকর্তা। তিন পত্রিকায় দেয়া বিল ভাউচার ও টাকার পরিমান সংক্রান্ত তথ্য গত ৯ নভেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা এখনো তা পাঠাতে পারেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘তবে সেই জনসংযোগ কর্মকর্তা ও পত্রিকার বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের ঘুপচি বিজ্ঞাপন প্রকাশের বিষয়টি প্রামাণিত হয়েছে। তাই শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করবে ওই অনুসন্ধানী কর্মকর্তা।’

আর কমিশন তা যাচাই-বাছাই শেষে মামলার অনুমোদন দিলেই তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হতে পারে বলে জানান তিনি।বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই