ঘুমের ওষুধ সেবনের মারাত্মক ক্ষতিকর দিক গুলো

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুম ভালো হওয়ার উদ্দেশ্যে ঘুমের ওষুধ নেওয়া হলেও এ অভ্যাসের দীর্ঘকালীন প্রভাব পড়ে শরীরে উপর। আর সেটি অত্যন্ত খারাপ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ঘুম এবং মৃগীরোগ বিভাগের পরিচালক কার্ল বাজিল এ বিষয়ে বলেন, “যারা ঘুমের ওষুধ নেন তারা ভালোভাবেই জানেন এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এটি শরীরে কি পরিমাণে ক্ষতি করে এটি তারা জানেন না।”

তিনি আরও বলেন, “ঘুম না হওয়ার সহজ সমাধান হিসেবে কাজ করে ঘুমের ওষুধ। তবে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান এটি নয়। বরং বেশিদিন ঘুমের ওষুধ গ্রহণের অভ্যাস লিভার এবং কিডনির ক্ষতি করে।”

রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, “বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিষন্নতায় ভোগার পরিমাণ কিছুটা বেশি। আর এই মানসিক অবসাদ থেকে বাঁচতে তারা ঘুমের ওষুধের সাহায্য নেয়। তবে একবারে বেশি ঘুমের ওষুধ খাওয়া হলে তা লিভার এবং কিডনির গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। আর দীর্ঘদিনের অভ্যাস খুব ধীরে ক্ষতি করবে।”

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটটিতে জানানো হয়, ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে উঠার পরেও অনেক সময় সারাদিন এর প্রভাব থেকে যায়। যা কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। যারা গাড়ি চালান তাদের জন্য এটি খুবই বিপদজনক। কারণ কিছু ঘুমের ওষুধে পরের দিন পর্যন্ত ‘হ্যাংওভার’ অনুভূত হয়ে থাকে। আর মাতালভাব নিয়ে গাড়ি চালানো বা রাস্তায় হাঁটাচলা করা একেবারেই নিরাপদ নয়।

ডা. কামরুল বলেন, “ঘুমের ওষুধ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে দিতে পারে। এর ফলে হ্যালুশিনেশন এবং বিভ্রান্তির মতো সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া ঘুমের ওষুধে আসক্ত হয়ে পড়লে তা পানি পিপাসা কমিয়ে দেয়, এতে করে শরীরে পানি শূণ্যতা দেখা দিতে পারে ফলে তা কিডনিতে প্রভাব ফেলে। এ কারণে অনেক সময় হেপাটাইটিস ধরনের রোগও হতে পারে।”

সব ধরনের ঘুমের ওষুধ একই ধরনের প্রভাব ফেলে না। ডা. কামরুল জানান, ঘুমের ওষুধের প্রভাব ভেদে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। এক ধরনের ওষুধ মস্তিষ্ককে উদ্দীপনা জাগায়।

অপরটি হিপনোটিপ, বা ওই ওষুধগুলোর কারণে গ্রহণকারীর হ্যালুশিনেশন বা ভ্রান্তির সমস্যাগুলো দেখা দেয়। আর অপর ধরনের ঘুমের ওষুধের তালিকায় রয়েছে বহুল প্রচলিত নেশা দ্রব্যগুলো। এগুলো গ্রহণে খুব সহজেই আসক্ত হয়ে যায়।

ডা: কামরুল আরও জানান, কিছু কিছু ঘুমের ওষুধের আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য ওষুধ পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ আসক্তি থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে অন্য ওষুধ তেমন একটা কাজ করে না। এ ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছা এবং পরিবারের সাহায্যই বেশি জরুরি।



মন্তব্য চালু নেই