চিরিরবন্দরে শীতের ভ্রমান ব্যবসা জমজমাট

মোহাম্মাদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: শীত আসতেই। প্রকৃতি অন্তত সেই বার্তাটা জানান দিতে শুরু করেছে। শীত মানেই তো পিঠা-পুলির দিন। পিঠার ঘ্রাণে ম-ম করবে চারদিক।

এমন কিছু ভাবনাই তো বাঙালির মানসপটে জায়গা করে নেয়। হেমন্তের হালকা শীতল আমেজ নিয়ে আসা বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় এখন পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে যায়।

শীতের আগমনীবার্তা পেয়েই জমে উঠেছে চিরিরবন্দরের গ্রামীন শহরের রাস্তার পাশে বসা পিঠার দোকানগুলো।

চিরিরবন্দরে বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসছে বিক্রেতারা। অনেকে আবার পেশা পরিবর্তন করেও বসছে পিঠা বিক্রির দোকান নিয়ে। বেচাকেনাও বেশ ভালোই চলছে।

চলতি পথে থেমে কেউ বা আড্ডায় বসেই সন্ধ্যার নাশতাটা সেরে নিচ্ছেন গরম গরম ভাপা পিঠা কিংবা চিতোই পিঠা দিয়ে। বিক্রেতাদের সঙ্গেও আলাপ করে জানা গেল, বেচা-বিক্রি বেশ ভালোই। তাই তো অনেকেই এই শীতের মৌসুমে পিঠা বিক্রিকে বেছে নিয়েছেন মৌসুম পেশা হিসেবে।

রাণীরবন্দর বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে মোড় পেরিয়ে আসতেই পথে চোখে পড়ে এসব পিঠার দোকান। বেশির ভাগ বিক্রেতাই ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন।

রাণীরবন্দর পিঠা বিক্রেতা সাজেদ জানান, আগে চা-বিস্কুট বিক্রি করতেন এখন পিঠা বিক্রি করছেন। ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে তিনি বসছেন ভাপা পিঠা নিয়ে। শীতের সময়টাতে তিনি ভাপা পিঠাই বিক্রি করেন।

সাজেদ আরোও জানান, ‘শীতের সময় ভাপা পিঠাই বিক্রি করি। প্রতিটা পিঠা ৫ থেকে ১০টাকা। সবাই বেশ পছন্দ করে এই সময় ভাপা পিঠা।’

কথা বলতে বলতেই বুলবুল মিয়া চুলা থেকে গরম পিঠা নামাচ্ছেন। ধোঁয়া ওঠা পিঠা কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। বুলবুল মিয়ার দোকানে বসেই কথা হয় আরেক জনের সঙ্গে, তিনি এসেছিলেন পিঠা খেতে। কথায় কথায় ওই যুবক জানান, এখন সন্ধ্যার নাশতাটা পিঠা দিয়েই করেন তিনি।

পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা একদল তরুণ-তরুণী পিঠা খাচ্ছিলেন। কথায় কথায় তাঁদের মধ্যে আরিফ নামে এক তরুণ বলেন, শীতে চুলার পাশে বসে পিঠা খাওয়ার যে ছবি আমাদের চোখে ভেসে ওঠে, নগর জীবনে তার দেখা মিলবে কই । তাই এরা আছে বলে একটু পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়।

পিঠা বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিকেল থেকে শুরু হয় বিক্রি।সকাল বেলা খুব চাপ থাকে পিঠা বিক্রির তবে সব চেয়ে সন্ধ্যার দিকে বেচাবিক্রির চাপ বেশি থাকে। রাত ৯টা পর্যন্তই মূলত বিক্রি বেশি হয়। বিক্রির সময় এলাকাভিত্তিক একেক রকম। যেখানে মানুষের উপস্থিতি বেশি সেখানে বেশি সময় পর্যন্ত বিক্রি হয়।

চুলার অল্প আঁচে ধোঁয়া উড়ছে। গরম গরম ভাপা পিঠা নামছে চুলা থেকে। ক্রেতারা এসে সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন।

অনেক বিক্রেতা ভাপা পিঠার সঙ্গে চিতোই পিঠা বিক্রি করছেন নানা রকম ভর্তা দিয়ে। শীতের আমেজ আসতে না আসতেই পিঠার ধোঁয়ায় শীতের হাওয়া জনজীবনে লেগে গেছে।



মন্তব্য চালু নেই