চেনা শব্দের অচেনা অর্থ

প্রতিটি ভাষাই পরিবর্তিত হয়। আর এই পরিবর্তনের হাত থেকে মুক্ত নয় আমাদের আজকের যুগে ব্যবহৃত বহুল প্রচলিত ভাষাগুলোও। সময় সবকিছু পাল্টে দেয়। মানুষ, দেশ, ভূমির সাথে সাথে তাই পাল্টায় ভাষাও। তবে মাঝে মাঝে ভাষার কিছু কিছু শব্দের পরিবর্তন এতটাই বেশি হয় যে প্রথম মানের চাইতে একেবারে উল্টো কোন মানেকে আঁকড়ে ধরে সেটি। চলুন দেখে আসি আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনে ব্যবহৃত পুরো পাল্টে যাওয়া মানেসহ এমনই কিছু নানান ভাষার নানান শব্দকে শব্দকে।
১. মুডি

মুডি বলতে কি বুঝি আমরা? একটু ভাব দেখানো আর গোমড়ামুখো মানুষদেরকেই তো? কিন্তু আপনি যদি আজ থেকে অনেক বছর আগে ১৬ শতকে জন্মাতেন তাহলে হয়তো ব্যাপারটা একদমই এমন হতো না। কারণ, সেসময় মুডি বলতে বোঝানো হত সাহসী মানুষদেরকে! এই যেমন সেসময়ের এক লেখনীতে নির্ভীক বীর জোয়ান অব আর্ককে বলা হয়েছে মুডি বা সাহসী! আসলে এই মুডি শব্দটি এসেছে মোডিগ থেকে, যার অর্থ ছিল সাহসী। তবে ১৫৯০ সালের পর থেকে এর ব্যবহার বদলাতে থাকে।
২. আর্টিফিশিয়াল

নকল বা বানানো কিছুকে বোঝাতে কথায় কথায় অনেকেই ইতিবাচকভাবে ব্যাপারটা প্রকাশ করতে বেছে নেন ইংরেজি আর্টিফিশিয়ালকে। তবে আজ থেকে কয়েকশ বছর আগে ১৪ শতকে কিন্তু আর্টিফিশিয়াল মানে একদমই আলাদা ছিল। তখন এর মানে ছিল খুব বিদ্বান কেউ (মেন্টালফ্লস)! শব্দের আগে আর্ট বা শিল্প থাকার দরুন হয়তো এমনটা মানে ছিল আর্টিফিশিয়ালের তখন। ফলে আর্টিফিশিয়ালের মাধ্যমে তখন কেউ নকল নয়, বরং বোঝাতো খুব ভালোভাবে আর দক্ষভাবে করা কোনকিছুকে।
৩. নাইস

কোনকিছুকে ভালো বোঝাতে গেলে বা কোন ব্যাপারে নিজের ভালোলাগাকে প্রকাশ করতে গেলে এই শব্দটি প্রায়শই ব্যবহার করে থাকি আমরা। তবে আপনি কি জানেন আরো কিছু শব্দের মতন এই শব্দটিরও আগে ছিল একেবারে আলাদা মানে? আর তাও আবার একটা নয়, বরং বেশ কয়েকটা। ১২ শতকে নাইস বলতে বোঝানো হত বোকাকে। ১৪ শতকে যত্নবান আর ১৮ শতকে অবশেষে নিজের বর্তমান অর্থে প্রকাশিত হয় নাইস!
৪. স্যাড

ভাবছেন এত সহজ আর ব্যবহৃত শব্দ স্যাডেরও আলাদা মানে ছিল? বাস্তবে সত্যি যে, স্যাড শব্দটি দ্বারা ১৩০০ শতকের দিকে কষ্ট বা কষ্ট সংক্রান্ত কিছু নয়, বরং বোঝানো হত বেশি খাওয়া হয়ে গিয়েছে! পরবর্তীতে এর মানে একবার বদলে ভারী এবং আরেকবার ক্লান্ততে গিয়ে দাড়ায়। আর শেষমেশ? দুঃখিততে এসে ঠেকে স্যাড আর এর মানে।
৫. হাজব্যান্ড

বর্তমানে এর মানে স্বামী বা পতি হলেও জার্মান ভাষা অনুসারে এর মানে একসময় ছিল ঘরের মালিক বা বাড়িওয়ালা। হাস থেকে বাড়ি আর বান্ডা থেকে মালিক- এইভাবেই শুরু হয়েছিল হাজব্যান্ডের পথচলা। তখন বৈবাহিক কোনকিছুর সাথে কোনরকম সম্পর্ক ছিলনা শব্দটির (মিরর)। যদিও এর বর্তমান ব্যবহার একেবারে অন্য কথাই বলে।



মন্তব্য চালু নেই