চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে দেশ: শুধু এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষা

চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে দেশ, পুড়ছে দেহ, পুড়ছে মন। নগরে শ্রমজীবীদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। একেকটি গণপরিবহণ যেন চলন্ত চুলা। ঘামে সেদ্ধ হয়ে চলছে মানুষ।

প্রথম সকালে আকাশে খানিকটা মেঘের আভাস দেখা দিলেও পূব আকাশে সূর্য উঠতেই উধাও সব। সরাসরি সূর্যতাপ লাগলে জ্বলুনি ধরে গায়ে। আর জলীয় বাস্পের আধিক্যের কারণে শরীরের ভেতরে চরম অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়া মানুষ অপেক্ষায় আছে, কখন নামবে বৃষ্টি, কখন অবসান হবে এই পরিস্থিতির।

এক পশলা বা দুই এক দিনের বৃষ্টি হয়ত চৈত্রের এই গরম সাময়িকের জন্য কমাবে। কিন্তু গ্রীষ্মের আরও দুই মাস এমন আবহাওয়ার মধ্য দিয়েই কাটাতে হবে।

গ্রাম এলাকায় সবুজ গাছপালার কারণে গরম কিছুটা সহনীয় থাকলেও নগরে গাছের অভাবটা বছরের এই সময়টায় টের পায় মানুষ। আফসোস করে পরিবেশের ক্ষতি করে এভাবে অপরিকল্পিত নগরায়নের। তীব্র গরম মানুষের অনেকগুলো বোধই জাগ্রত করে। আবার প্রকৃতির দয়ার আশায় করে অপেক্ষা।

তাহলে কবে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি? স্বস্তির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৈশাখের শুরুতে বৃষ্টি হতে পারে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

গত কয়েকদিনের টানা দাবদাহের কারণে ঘরে-বাইরে স্বস্তি মিলছে না কোথাও। বসন্ত বাতাস আর দোলা দেয় না মনে, বরং গরম হল্কা হলকার ধাক্কা লাগে গায়ে। বেশি বিপদে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা। গরমে সর্দি-কাশি, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি তারাই।

প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। ক্লান্তি দূর করতে কেউ পান করছেন শরবত, কেউ খাচ্ছেন শসা-তরমুজ। চৈত্রের খরতাপে সবচেয়ে বেশি বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ। খানিকটা বিশ্রাম নেয়ারও সুযোগ পাচ্ছেন কম মানুষ। কারণ, এই নগরে বসে ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেবে এমন গাছপালা কই? তা ছাড়া বসে থাকলেই আয় কমে যাবে। তাই জীবন ক্ষয় করে কাজ করে যেতে হয় জীবনের তাগিদে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৮ চৈত্র সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চূয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় ঢাকায় সর্বেচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বর্তমানে পাবনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপ্রবাহ। ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী বিভাগে চলছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপ প্রবাহ।

সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাবনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা ও রংপুর বিভাগ এবং রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এপ্রিলের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) এবং অন্যত্র এক থেকে দুটি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮ এর চেয়ে বেশি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই