ছাগলের খামারে ‘অস্ত্রের গুদাম’, ২২ পিস্তল উদ্ধার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ৬নং ওয়ার্ডের শংকরবাটি এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২২টি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানে পাওয়া যায় ৪৫টি ম্যাগজিন এবং ১৩৬টি গুলিও। বেলা তিনটার দিকে শহরের শংকরবাটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই অস্ত্র ও গুলিগুলো উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, শাহদীন কাদির নামে সেনাবাহিনীর এক সার্জেন্টের মালিকানার ওই বাড়িটিতে ছাগলের খামার গড়েছিলেন একজন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। সেখানে একটি খাটের নিচে থাকা বস্তার ভেতর এই অস্ত্র ও গুলিগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে তখন ঘটনাস্থলে কেউ ছিলেন না।

এই বাড়িটি কে ভাড়া নিয়েছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ সুপার বি এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, একটি অস্ত্রের চালান এই জেলা থেকে বাইরে যাচ্ছে-এমন খবর পেয়ে সকাল থেকেও ওই বাড়িটির আশেপাশে অবস্থান করছিলেন তারা। ওই বাসায় দুপুর পর্যন্ত কেউ না আসায় তারা সেখানে ঢুকে অস্ত্র ও গুলিগুলো উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক শাহীন কাদিরের সৎ মা রোকেয়া বেগম ও চাচাতো ভাই শাকিল আহমেদ নামে দুইজনকে আটক করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, গত তিনদিন ধরে এই অস্ত্র ব্যবসায়ীদের নজরদারিতে রাখে পুলিশ। রবিবার রাতে ২৯টি ছাগলের সঙ্গে এই অস্ত্রের চালানটি জেলার বাইরে যাওয়ার পথে পুলিশের গতিবিধি টের পেয়ে ফেরত আসে অস্ত্রব্যবসায়ীরা। পরে তারা শংকরবাটি এলাকার ওই বাড়িতে ছাগলসহ এসব অস্ত্র মজুদ করে।

পুলিশ সুপাার আরও জানান, দেশব্যাপী নাশকতার উদ্দেশ্যে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভারত থেকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খাাসের হাট এলাকা দিয়ে এসব অস্ত্র মজুত করে। এই অস্ত্র চোরাচালানের হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনসম্মুখে আনা হবে আশ্বাস দেন তিনি।

রাজশাহী বিভাগের ভারত লাগোয়া জামায়াতের সহিংসতাপ্রবণ এই জেলাটিতে প্রায়ই অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। সীমান্ত পারি চোরাচালান করে আনা অস্ত্র এখান থেকে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন এলাকাতেই। মাঝেমধ্যে ধরাও পড়ে সে চালান। তবে একসঙ্গে এতগুলো অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা কখনও ঘটেনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার বলেন, এই অস্ত্রগুলো কোত্থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল এবং কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।

এই জেলাতেই নব্য জেএমবির নিহত প্রধান সারোয়ার জাহানের বাড়ি। তবে এই অস্ত্র উদ্ধারের সঙ্গে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে জেলার পুলিশ সুপার বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তদন্ত করে পরে জানা যাবে।



মন্তব্য চালু নেই