ছাত্রলীগকে পিটিয়ে মানুষ করার হুঁশিয়ারি দিলেন মন্ত্রী

প্রায় ২২ বছর পর দিনাজপুরে আয়োজিত মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে গোলযোগ হয়েছে। এ সময় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী। তবে তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ছাত্রলীগের মাস্তানদের পিটিয়ে মানুষ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এদিকে কাউন্সিল চলাকালে বিক্ষোভ মিছিলসহ দুই দফা পটকার বিস্ফোরণ ঘটান কাউন্সিল বিরোধীপক্ষের নেতাকর্মীরা। এর আগেই সাংগঠনিক ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে তারা। আর বিক্ষোভ চলায় কড়া পুলিশি প্রহরায় মূল দরজা বন্ধ করে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার সকাল থেকেই দিনাজপুরের নাট্য সমিতি অডিটোরিয়ামে মহিলা লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাউন্সিলবিরোধী একটি দল ভিতরে প্রবেশ করে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে ও সভামঞ্চ তছনছ করে। পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার কাউন্সিল চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

কাউন্সিলে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী লুলু আফসারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, কেন্দ্রীয় নেত্রী ইয়াসমিন হোসেন, বনশ্রী স্মৃতি কোণা বিশ্বাস প্রমুখ। তবে কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন না জেলা কমিটির সভানেত্রী সুলতানা বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদিকা তারিকুন বেগম লাবুনসহ অনুসারীরা।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাউন্সিলবিরোধীরা সেহেলী আক্তার ছবি, শিউলী, শম্পা দাস মৌসহ কয়েকজন মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সম্মেলন গেটের সামনে আসে। এসময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা গেটের সামনে বিক্ষোভ করে। তাদের সঙ্গে সঙ্গী হয় ছাত্রলীগ নেতা রায়হান ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।

এসময় সম্মেলন গেটের সামনে ও ছাদে কয়েকটি পটকার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তারা বলেন, কোনো প্রচার ছাড়াই কার্যকরী একটি গ্রুপকে বাদ দিয়ে কাউন্সিল হচ্ছে। তাছাড়া কাউন্সিলের ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের নাম নেয়। তাই তারা এর বিরোধিতা করছেন। কাউন্সিলে মাঠ পর্যায়ের নেত্রীদের বাদ দিয়ে মনগড়া নেত্রীদের নেতা বানানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। বিক্ষোভ চলাকালে মূল দরজা বন্ধ করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বেলা ২টার দিকে কাউন্সিল শেষ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বেরিয়ে এলে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন। এসময় মন্ত্রী উত্তেজিত হয়ে একজনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর, চাপড়িয়ে সোজা করে দিব। তোমার মতো কত মাস্তানকে মানুষ করেছি। আমার সামনে মাস্তানি।’

এর আগে কাউন্সিলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, নিজের সমর্থন থাকতে পারে। তবে অধিকাংশ নেতাকর্মী যাকে চাইবে তাকেই নেত্রী করা হবে। এখানে আমার করার কিছু নেই।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসমিন হোসেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এবং জেলা কমিটি গঠন বিষয়ে পরবর্তীতে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সম্মেলন সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এদিকে বিকেল ৫টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জেলা মহিলা লীগের নেত্রীরা। এসময় জেলা কমিটির সভানেত্রী সুলতানা বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদিকা তারিকুন বেগম লাবুন বলেন, গঠনতন্ত্র না মেনেই এ কাউন্সিল ডাকা হয়েছে। আমরা চাই গঠনতন্ত্র মোতাবেক কাউন্সিল হোক।



মন্তব্য চালু নেই