প্রধানমন্ত্রীর নিষেধের পরও আওয়ামী লীগে কেন জামায়াত?

শুক্রবার পিরোজপুরের আওয়ামী লীগের এমপি একেএমএ আউয়াল মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর অনুসারীদের পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। জামায়াত ও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে কাউকে যেন না নেওয়া হয় সে বিষয়ে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন দলীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসে সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত থেকে যারা আমার দলে আসতে চায়, তাদের আমরা নেব না।

২০১৪ সালে বছরের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ২০ হাজার নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে। বলা হচ্ছে, কেবল জামায়াত থেকেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে ৫ হাজার।

জানাগেছে, জয়পুরহাটে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন থেকে দল ছুট হয়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের হিড়িক পড়েছে। বিগত পাঁচ মাসে জেলার পাঁচ উপজেলায় বিভিন্ন নেতার হাতে ফুল দিয়ে অন্তত চার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। সর্বশেষ শনিবার (৬ জুন) জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর পার্কে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী-সমর্থক আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।

২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের রোকন নওশের আলী স্থানীয় যুবলীগ আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের হাতে ফুল দিয়ে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ১৫ মার্চ পাবনায় সরকারদলীয় সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সের উপস্থিতিতে দুই শতাধিক কর্মীসহ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এক ইউনিয়ন জামায়াতের নায়েবে আমির।

২০১৫ সালের ২৮ মে সালের বছরের এপ্রিলে ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলা জামায়াতের সাবেক সভাপতি আবু বক্কর খান শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৫ সালের ১২ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জামায়াত নেতা আফজাল হোসেন পিন্টু আওয়ামী লীগে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

২০১৫ সালের ৬ জুন জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুর উপস্থিতিতে পাঁচবিবি উপজেলা জামায়াতের মজলিসে শূরার সদস্য আব্দুস সালামের নেতৃত্বে বিএনপি ও জামায়াতের ৫ শতাধিক নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা দেয়।

২০১৫ সালের ১০ এপ্রিল রাজশাহীর বাগমারায় আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে ফুল দিয়ে উপজেলা জামায়াতের প্রাক্তন সেক্রেটারি এবং ভবানীগঞ্জ মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম শতাধিক সমর্থক নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৫ সালের ২০ অগাস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন সালথার উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান।

২০১৫ সালের এপ্রিল কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বাংলা বর্ষবরণের এক অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৫ সালের ২৪ মে নোয়াখালীতে বিএনপি ও জামায়াতের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

২০১৫ সালের ৯ মে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিএনপি নেত্রী ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রিনা হালিম এবং স্থানীয় জামায়াত নেতা মাওলানা শরীফ হোসাইনের নেতৃত্বে বিএনপি ও জামায়াতের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি সাব্বিরুল হক তালুকদার শামীমের নেতৃত্বে বিএনপি ও জামায়াতের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল গোপালগঞ্জ জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এমএ নাসির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাউদ্দিনের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।



মন্তব্য চালু নেই