ছাত্রীকে যৌন হয়রানী: বিক্ষুদ্ধ জনতার তোপের মুখে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আটক

মোঃ শামীম আখতার, উপজেলা প্রতিনিধি, মিঠাপুকুর (রংপুর)॥ রংপুরের মিঠাপুকুরে মাত্রাসা ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার এলাকাবাসি বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে। এসময় এলাকাবাসি অভিযুক্ত শিক্ষকদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। প্রতিবাদ চলাকালে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসি একটি কক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষক আ. গফফারকে আটক করে রাখেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে।

এলাকাবাসির অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার পঁচারহাট দাখিল মাদ্রাসার ২জন শিক্ষক ওই প্রতিষ্ঠানেরই ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে সম্প্রতি যৌন হয়রানী করেন। ঘটনাটি ওই ছাত্রীটি বাড়িতে জানালে তার অভিভাবক এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার চায়। পরে বিষয়টি সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে লোক লজ্জায় ছাত্রীটি মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে ছাত্রী হয়রানীর বিষয়টি নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে মাদ্রাসার সুপার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ছাত্রীটির পরিবারকে নানা হুমকী-ধামকী দিচ্ছেন। এলাকাবাসি ও অভিভাবকগণ দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সেঁটে দিয়েছে।

পোস্টারে উল্লেখ করা হয়- ‘বিচার চাই, বিচার চাই, মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর জন্য পঁচারহাট দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল আজিজ ও সহকারী শিক্ষক আব্দুল গোফফার এর দৃস্টান্তমূলক বিচার চাই।’ কিন্তু কিছুতেই কাজ না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আশপাশের গ্রামের শতশত অভিভাবক ও এলাকাবাসি মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি এলাকার সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে পঁচারহাট বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এসময় অভিযুক্ত একজন শিক্ষক আ. গফফারকে আটক করে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।

খবর পেয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর ঘটনাটি ধাপাচাপা দিয়ে শিক্ষকদের ছাড়িয়ে নিতে প্রভাবশালী মহল তদবির চালাতে থাকে। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহিনুল ইসলাম বলেন, সুপার ও সহকারী শিক্ষক থানায় আছেন। তবে তারা আটক বা গ্রেফতার হয়েছেন কিনা তা স্পস্ট করে জানাননি তিনি।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে সেখানে এ বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা চলে আসছে। ঘটনার পরই অভিযুক্ত শিক্ষকদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারা পালিয়ে যায়। শুনেছি আজ (গতকাল) সকালে মিছিল হয়েছে। পুলিশ পরিদর্শককে সেখান থেকে অভিযুক্তদেরকে ধরে নিয়ে আসার জন্য বলেছি।



মন্তব্য চালু নেই