ছোট্ট এই ভুলটি করলে আপনার কোনো আমলই কবুল হবে না

মহান আল্লাহ তা’য়ালাকে খুশি করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা বিভিন্ন ইবাদত বন্দিগীর মধ্যে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। আপনি নিজেও হয়তো নিজেকে আল্লাহর ধ্যানে নিয়োজিত রাখেন। কিন্তু আপনি জানেন কি আপনার ছোট্ট একটি ভুলে আল্লাহ তায়ালা আপনার এতো কষ্টের আমলগুলো কবুল করবেন না।

মূলত যারা অবৈধ ও হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে ভোগ দখল করে তাদের আমল আল্লাহ পাক কখনোই কবুল করেন না।

এ প্রসঙ্গে হযরত আনাছ (রা.) বলেন, “আমি বললাম, হে রসূল! আল্লাহর কাছে আমার জন্য দোয়া করুন যেন তিনি আমার দোয়া কবুল করেন। উত্তরে রসূল (স.) বললেন, “হে আনাস তোমার উপার্জনকে হালাল রাখ, তোমার দোয়া কবুল হবে।

মনে রেখ, কেউ যদি হারাম খাদ্যের এক গ্রাসও মুখে নেয়, তাহলে চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার দোয়া কবুল হবে না।” অবৈধভাবে তথা হারাম পন্থায় উপার্জন দু’রকম হতে পারে—

প্রথমত:সম্পূর্ণরুপে শক্তি প্রয়োগে ও অত্যাচারের মাধ্যমে, যেমন-আত্মসাত, অপহরণ, জবরদখল, গচ্ছিত সম্পদ বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে ভোগদখল, চুরি ডাকাতি ইত্যাদি।

দ্বিতীয়ত:খেলাধুলা, চালাকী, প্রতারণা ইত্যাদি। লটারী ও জুয়ার মাধ্যমে অর্থ জেতাও এর আওতাভুক্ত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, অর্থাৎ “তোমরা এক অপরের সম্পদ অবৈধভাবে ভোগদখল করোনা” (সুরা. আন-নিসা, ২৯)। হযরত ইবনে আব্বাস বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন শপথ দ্বারা অন্যের সম্পত্তির ওপর নিজের দখল প্রতিষ্ঠা করা।

বায়হাকীতে বর্ণিত আছে, রসূল (স.) বলেন, “আল্লাহ তায়ালা যেমন তোমাদের মধ্যে তোমাদের জীবিকা বণ্টণ করেছেন, তেমনি ভাবে তোমাদের স্বভাব-চরিত্রও বণ্টন ও করেছেন।

দুনিয়ার সম্পদ তিনি যাকে ভালোবাসেন তাকেও দেন, যাকে ভালোবাসেন না তাকেও দেন। কিন্তু আখিরাতের সম্পদ কেবল তাকেই দেন, যাকে তিনি ভালোবাসেন। আল্লাহ যাকে দ্বীন দান করেছেন, বুঝতে হবে যে, তিনি তাকে ভালোবাসেন।

কোন বান্দা হারাম সম্পদ উপার্জন করে তা নিজের প্রয়োজনে ব্যয় করলে তাতে সে বরকত ও কল্যাণ লাভ করবেনা। অন্যকে দান করলে সে দানও কবুল হবে না, আর যেটুকু সে দুনিয়ায় রেখে যায়, তা তার জন্য জাহান্নামের সম্বল হবে।

আল্লাহ মন্দকে দিয়ে মন্দ প্রতিহত করেন না, ভালো দিয়ে মন্দকে প্রতিহত করেন” (মুসনাদে আহমদ)।

হযরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন রসূল (স.) বলেছেন, “পৃথিবী মিষ্ট ও শ্যামল। এখানে যে ব্যক্তি হালাল সম্পদ উপার্জন করবে এবং ন্যায়সংগত পথে তা ব্যয় করবে, আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দেবেন, তাকে জান্নাত দান করবেন।

আর যে ব্যক্তি হারাম সম্পদ উপার্জন করবে এবং তা অন্যায় পথে ব্যয় করবে, আল্লাহ তাকে অপমানজনক স্থানে নির্বাসিত করবেন। আর হারাম সম্পদ হস্তগতকারী ব্যক্তিরা কেয়ামতের দিন আগুনে জ্বলবে।

রসূল (স.) আরো বলেন, “যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করবে তার পরোয়া করেনা, আল্লাহ তায়ালা তাকে কোন দরজা দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন তার পরোয়া করবেন না।”



মন্তব্য চালু নেই