ছোলা এখন ব্যবসায়ীদের কাছে সোনা

পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের ব্যবসায়ীরা নাকি কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতারা? দাম বাড়াচ্ছেন কারা? রোজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে সুযোগ বুঝে দ্বিতীয় ধাপে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ছোলার দাম। এই সময়ের সব থেকে বেশি প্রয়োজনীয় এই ভোগ্য পণ্যটি পাইকারিতেই বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা বেশি দামে।

যার দ্বিগুণ প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি আরো বৃদ্ধির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে একে-অপরকে দোষারোপ করেই সারা হচ্ছে দায়। সারা দেশে ‘টিসিবি’র কম মূল্যে উন্মুক্ত বিক্রয় সেবাও লাগাম টানতে পারেনি ঊর্ধ্বমুখী ছোলার বাজারের।

পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ হয়েই রাজধানীর আড়তগুলোতে ভোগ্য পন্য ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে অন্যতম পাইকারি আড়ত রাজধানীর কারওয়ান বাজার। সেখানে ছোলা ও ডালের পাইকারি দোকান বি-বাড়ীয়া জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা ‘হালিম জমাদার’র সাথে প্রতিবেদকের কথা হয়। পাইকারি বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “কিছু হইলেই খালি আমাঘো দোষ! আমাগোর উপরে নিচেও তো অনেক আছে। তাঁদের কথা তো আপনারা বলেন না”।

তবে চাহিদার বিপরীতে জোগান স্বল্পতাকেই দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে দাবি করছে পাইকারি বিক্রেতাদের অনেকে। ব্যস্ত এই পাইকারি বাজারটি ঘুরে দেখা যায় খুচরা বিক্রতাদের ব্যাপক হাক ডাক। তবে দাম বাড়ার এই খেলায় নিষ্পেষিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কষ্টার্জিত অর্থের এই অনিষ্টে ক্ষুব্দ তাঁরা।

এমনই একজন ইশতিয়াক রাহমান। রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকাতেই একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বেহিসেবি দাম বৃদ্ধির যন্ত্রণায় রোজার বাজার করতে পাইকারি বাজারেই চলে এসেছেন তিনি। সেখানে এসেও চিন্তার ভাঁজ কপালে। দাম বেড়েছে এখানেও।

তিনি বলেন, “যন্ত্রণার শেষ নেই, একটা উপলক্ষ পেলেই হুহু করে দাম বাড়তে শুরু করে। সেখানে ছোলাকে তো এখন ব্যবসায়ীরা সোনা মনে করছে। মাজখান থেকে আমরা সাধারণরা মরছি”।

মধ্যসত্তভোগী ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগের দোলাচলে লাগামহীন ছোলার বাজার এখন সাধারণ মানুষের কপালের কুনে ভাজেরই জন্ম দিচ্ছে না বরং অস্থিতিশীল করছে পুরো বাজার ব্যাবস্থাকে।

নিয়মিত এই দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সদস্য সচিব ‘আনোয়ার পারভেজ’ বলেন, ‘এটি অনৈতিক। এখানে সরকারের একটি সুষ্ঠু মনিটরিং ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। শুধুমাত্র শাস্তি দিয়েই কোন অপরাধ ঠেকানো যায় না। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় সরকারকেই দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই”।

উল্লেখ, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) উন্মুক্ত বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি করছে ৭০ টাকা করে। রমজান উপলক্ষে সারা দেশে ১৭৪ টি এবং রাজধানীতে ২৫ টি পয়েন্টে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরকার নির্ধারিত কম মূল্যে কিক্রি করছে ‘টিসিবি’।



মন্তব্য চালু নেই