জঙ্গিদের টার্গেট ছিল এসপি বাবুল আকতার!

স্ত্রীকে হত্যা করলেও মূলত খুনিদের টার্গেট ছিল পুলিশ অফিসার বাবুল আকতার। জঙ্গিরা দীর্ঘদিন ধরে বাবুল আকতারকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে আসছিল- এমন ধারণা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের। বেশ কয়েকবার হুমকিও এসেছিল। জঙ্গি সন্ত্রাসীর বোমা হামলার মুখ থেকে ফিরে আসেন তিনি। তবে এসবকে তেমন একটা গুরুত্ব দেননি সাহসী এ অফিসার।

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা বারবার চেষ্টা এবং পরিকল্পনার পরও হয়তো বাবুলকে হত্যা করতে না পেরে দুবৃর্ত্তরা স্ত্রীকে হত্যা করে প্রতিশোধ নিয়েছে তার ওপর।

এদিকে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে রাজপথে একজন পুলিশ অফিসারে স্ত্রী খুনের পর পুলিশ কর্মকর্তা নিজেদের নিরাপত্তা পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন।

সিএমপি’র উপ-কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে বাবুল আক্তার তাদের টার্গেটে ছিলেন, তিনি ঢাকা চলে গেলেও তার ও পরিবারের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তার স্ত্রী মাহমুদা মিতু বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সোর্স বডিগার্ডকে সাথে নেননি বলে জানান পরিতোষ ঘোষ।

তিনি জানান জানান, ‘ঘটনার সময় তিন মোটরসাইকেল আরোহীর মধ্যে চালকের মাথায় হেলমেটে ছিলো, অপর দুইজনের মুখ ছিলো খোলা।

দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে বাবুল আক্তারকে শান্ত্বনা দিতে গিয়ে তার এক সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন তো দেখছি আমাদের কারো নিরাপত্তা নাই। পরিবার আত্মীয় স্বজনকে টার্গেট করছে সন্ত্রাসীরা।’

উল্লেখ্য, গত বছর ৫ অক্টোবর নগরীর কর্ণফুলী থানার খোঁয়জনগর এলাকার একটি ভবনের নিচ তলায় জেএমবি আস্তানায় অভিযান চালাতে গিয়ে বাবুল আকতার গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। সেখানে তাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়ে মেরেছিল নিহত জঙ্গি নেতা জাবেদ। এরপরও সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল জেএমবি চট্টগ্রামের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ জাবেদসহ পাঁচ জঙ্গিকে। উদ্ধার করেন শক্তিশালী নয়টি হ্যান্ড গ্রেনেড, প্রায় ২শ’ রাউন্ড একে ২২ এর গুলি, একটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ছোরা, বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম, অস্ত্র তৈরির মেশিন ও জিহাদী বই। যদিও জেএমবির সামরিক কমান্ডার জবেদ কুয়াইশ অনন্যা আবসিক এলাকায় গ্রেনেড উদ্ধারের অভিযানে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন।

এই ঘটনার সুত্র ধরে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাটহাজারীর আমান বাজারের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জেএমবি নেতা ফারদিনের বাসা থেকেও বিপুল বিস্ফোরক ও অত্যাধুনিক স্নাইফার রাইফেল উদ্ধার করে আলোচনায় ছিলেন তিনি। মূলত এরকম জেএমবিবিরোধী বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের কারণে বাবুল তাদের টার্গেট হন বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

এর আগে ২০০৮ সালে সিএমপির কোতোয়ালী জোনের এসি হিসেবে বদলী হয়ে আসার পর ওই বছরই কোতোয়ালী থানার টাইগারপাস এলাকায় এক ছিনতাইকারীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রসহ ঝাপটে ধরে আলোচনার আসেন বাবুল আক্তার। সেই সাহসীকতার কারণে পেয়েছিলেন বিপিএম পদক।

কিন্তু বিচক্ষণ এবং সাহসী এ অফিসারকে বার বার আক্রমণে পরিকল্পনা এবং আক্রমণ করেও সফল না হয়ে তার পরিবারকে টার্গেট করেছে বলে মনে করছে পুলিশ কর্মকর্তারা।



মন্তব্য চালু নেই