‘জঙ্গি আস্তানায়’ থাকা আবু আসলে কে?

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুরের শিবনগর এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।

বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। ইতিমধ্যে সোয়াতের একটি টিমও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া ওই ‘জঙ্গি আস্তানার’ আশপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যেকোনো সময় বাড়িটিতে অভিযান চালানো হতে পারে।

তবে কথিত ওই জঙ্গি আস্তানায় কতজন অবস্থান করছেন তা জানা যায়নি। আইনশৃংখলা বাহিনীর ধারণা, বাড়িটিতে ৭/৮ জন থাকতে পারে।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়িটির ভেতরে এক দম্পতি ও তাদের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে ‘জঙ্গি আস্তানার’ বাড়ির মালিকের নাম জেন্টু হাজি। তিনি সেখানে থাকেন না। পাশেই আরেকটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন। তার এই বাড়িটি আবু বক্কর ওরফে আবু নামের একজন প্রায় দুই মাস আগে ভাড়া নেন।

কে এই আবু?
শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় থাকা আবু (৩০) পার্শ্ববর্তী এলাকার আফসার আলীর ছেলে। ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে আবুর নিজ বাড়ি।

আবুর বাবা আফসার আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আবুর মা ফুলসানা বেগম (৫০) খবর শুনে অসুস্থ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন।

তিনি জানান, আট বছর আগে শিবগঞ্জ উপজেলার আব্বাস বাজার এলাকার রুহুল আমিনের মেয়ে সুমাইয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় আবুর। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তার ছেলে শ্বশুর বাড়িতে থাকত। আবুর দুই মেয়ে। বাবা-মায়ের সঙ্গে আবুর খুব বেশি যোগাযোগ ছিল না, তবে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসত।

এদিকে আবুর বাবার বাড়ির পাশের কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, আবু শ্বশুরের বাড়ি ও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে ঈদ উদযাপন করত। এ নিয়ে তার বাবার সঙ্গে আবুর মত পার্থক্য ছিল। শ্বশুর বাড়ি গিয়েই আবু এসব আলাদা রীতিনীতি গ্রহণ করে। এ নিয়ে তার বাবা তাকে অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু আবু এসব ছাড়েনি।

তারা জানান, আবু পেশায় একজন মসলা বিক্রেতা ছিলেন। তিনি হাটে-বাজারে পাটি বিছিয়ে মসলা বিক্রি করতেন। আবু বাড়ির কাছের চাতরা ফাজিল মাদ্রাসায় দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, সাধারণত মসজিদে জামায়াত শেষ হওয়ার পর আবুরা কয়েকজন মিলে নামাজ পড়ত। আবু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে থাকত, সর্বশেষ বাবার বাড়িতে কিছুদিন ছিল।

এরপর বাবার সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তার বাবা। পরে আবু তার বাড়ির আধা কিলোমিটার দূরে জেন্টু বিশ্বাসের একটি অব্যবহৃত নতুন বাড়ি ভাড়া নেন।

বাড়ির মালিক জেন্টু বিশ্বাসের ছেলে আনারুল ইসলাম বাবুল জানান, গত ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল আবু। তাকে মূলত বাড়িটি দেখাশুনার জন্য বিদ্যুৎ বিলসহ সামান্য টাকায় ভাড়া দেয়া হয় বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই