জন্মদিন পালন করলেন না খালেদা জিয়া

অন্যান্যবারের মতো এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করেননি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের বন্যা পরিস্থিতি, নেতাকর্মীদের গুম-খুনসহ নানা কারণে এবার জন্মদিন পালন না করার সিদ্ধান্ত নেন বিএনপির চেয়ারপারসন। তাছাড়া আওয়ামী লীগও খালেদাকে এই দিনে জন্মদিন উৎসব পালন করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছিল।

এর আগে প্রতি বছর নানা সমালোচনার তোয়াক্কা না করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ১৫ আগস্ট জন্মদিনের কেক কাটেন। তবে এ বছর বিএনপি নেত্রীর জন্মদিনে কোন কেক কাটা হয়নি।

দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে গুলশান কার্যালয়ে জন্মদিনের কেক না আনার জন্য আগে থেকেই অনুরোধ করা হয়েছিল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নিমর্ম বুলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদাতবরণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকীতে জন্মদিন পালন করায় খালেদা জিয়াকে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।

সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণীপশোর মানুষের পক্ষ থেকে এদিনে জন্মদিনের অনুষ্ঠান না করার আহ্বান ছিল খালেদা জিয়ার প্রতি।

সম্প্রতি খালেদা জিয়ার সঙ্গে চা চক্রে অংশ নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এই শোকের দিনে জন্মদিন পালন না করার অনুরোধ জানান।

বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আগমগীর বলেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার মুখে দেশের জনগণ ভালো নেই। তাছাড়া বিএনপির বহু নেতা জেলে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। ঠিক এমনি অবস্থায় খালেদা জিয়া এ বছর তার জন্মদিনে কেক না কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া আওয়ামী লীগও খালেদাকে এই দিনে জন্মদিন উৎসব পালন করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে আসছিলেন।

খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বন্যার্ত মানুষ, দলের কারাবন্দী এবং গুম-খুনের শিকার নেতাকর্মীদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে বিএনপি চেয়ারপারসন জন্মদিন পালন করছেন না।

গত বছর ১৫ আগস্ট রাত নয়টার দিকে গুলশানের নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রথমে সিনিয়র নেতাদের নিয়ে এবং পরে অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিক কেক কেটেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এবার নেতাকর্মীদের ওইদিন কেক নিয়ে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এবার জঙ্গিবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ডাকের মধ্যে ১৫ আগস্ট জন্মদিন উদযাপন না করতে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। যদিও গতবার তারা না করার অনুরোধ করলেও শেষ পর্যন্ত দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে কেক কেটেছিলেন খালেদা জিয়া।

ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারীর বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থা, দেশব্যাপী বন্যাদুর্গত মানুষ ও কারাবন্দি নেতাকর্মীদের কথা বিবেচনা করে এবার আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে চেয়ারপারসন জন্মদিন পালন করছেন না বলে আগে থেকেই আমাদের জানানো হয়েছিল।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বন্যায় মানুষের দুর্দশা, সর্বত্র গুম-খুনে মানুষের লাশ আর লাশ, দলের নেতা-কর্মীদের ওপর গ্রেপ্তার-নিপীড়ন-নির্যাতনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই ম্যাডামের জন্মদিনে এবার আমরা কেক কাটার অনুষ্ঠান করছি না।”



মন্তব্য চালু নেই