জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

স্কুল-কলেজ জাতীয়করণের নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যেন কাউকে টাকা পয়সা না দেয়, তার আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করতে যাচ্ছে।

গত সম্পাহে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা এ ধরণের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য কাউকে কোনো টাকা পয়সা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কেউ যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য কাউকে যেন টাকা পয়সা না দেন, এ জন্য আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের নীতি অনুযায়ী দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মাধ্যমিক স্কুল ও একটি কলেজ পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে। সম্প্রতি নয়টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি চক্র কয়েক শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা করে সেই তালিকা ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা পয়সা চাইছে বলে তাদের কাছে অভিযোগ এসেছে।

সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের একটি কলেজ থেকে জানানো হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে জাতীয়করণের জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি ওই কলেজের একজন শিক্ষক শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানালে তাঁদের টাকা দিতে নিষেধ করা হয়। এখন এ বিষয়ে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি জারি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

শুধু জাতীকরণ নয়; ভবন নির্মাণ, এমপিওভুক্তি, বিষয় খোলা, প্রকল্প অনুমোদনসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজের কথা বলে একটি প্রতারক চক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ দাবি করছে।

উল্লেখ্য, ভবন নির্মাণ, এমপিওভুক্তি, বিষয় খোলা, প্রকল্প অনুমোদন প্রভৃতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রুটিন কাজ। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মন্ত্রণালয়ে এ ধরণের কাজ সম্পন্ন হয়। এসব সরকারি কাজের জন্য অর্থ আদায়ের কোনো বিধান নেই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ বা এ ধরণের কোনো কাজের জন্য অর্থ গ্রহণ করেছেন বলে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ এ ধরণের কাজের কথা বলে অর্থ দাবি করলে তাকে নিকটস্থ থানায় সোপর্দ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

৩০টি স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের একটি তালিকা হঠাৎ করেই নড়াচড়া ও অনুমোদন হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার খবর পাওয়া গেছে। একজন উপ-সচিবের দপ্তর বদলের খবর পাওয়া গেছে।

শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বিদেশে থাকা অবস্থায় হঠাৎ পরিদর্শনের জন্য ৫টি কলেজের একটি তালিকা চাওয়া হয় মন্ত্রণালয় থেকে। এ ঘটনায় অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখার একজন সহকারি পরিচালকের সংশ্লিষ্টার অভিযোগ রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের দপ্তরের পিও/পিওন/প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও ঘুষ লেনেদেনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয়করণের ভুয়া তালিকা বানিয়ে পঞ্চগড়ের একটি ও নাটোরের একটি ও কুড়িগ্রামের দুটি কলেজ শিক্ষকের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা নিয়েছে একটি চক্র।



মন্তব্য চালু নেই