জানেন কি, রাতের খাবার খাওয়ার ঠিক সময় কখন?

অনেকেই ভাববেন এটা আবার কোনো বিষয় হলো! রাতের খাবার তো রাতেই খাব, এর মধ্যে আবার ‘কখন’ কেন, তাই না? আসুন, দেখা যাক এখানে ‘কিন্তু’ ওঠে কেন। ইউরোপ-আমেরিকায় সাধারণত সন্ধ্যা না হতেই রাতের খাবারের পাট চুকে যায়, যাকে বলা হয় ডিনার। আমাদের দেশেও গ্রামের মানুষ সাধারণত সন্ধ্যা রাতেই খেয়ে নেয়। অবশ্য আগে গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকায় বেশি রাত অবধি না খেয়ে জেগে থাকার উপায় ছিল না। এখন বিদ্যুৎ থাকলেও আগের সেই অভ্যাস রয়ে গেছে। কিন্তু শহরের মানুষের অভ্যাস প্রায় বিপরীত। একটু বেশি রাতে খাওয়ার চলই বেশি। এই দুই রীতির মধ্যে কোনটা ভালো? এ বিষয়ে নিউইয়র্কের ডা. জেমি এ আউফম্যানের কিছু পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ আমাদের উপকারে লাগতে পারে।

১. অনেকেরই হয়তো অভিজ্ঞতা আছে যে বেশি রাতে খেলে একটু অসুবিধা হয়। ঢেকুর ওঠে, গলা জ্বালা করে। মাথাব্যথা, ফুসফুসে প্রদাহ হয়। রাত ১১টায় খাবার খান, এমন অনেক মার্কিন এসব উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন।

২. বেশি দিন এ রকম হলে এমনকি খাদ্যনালির ক্যানসার হতে পারে বেল ধারণা করা হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৭০-এর দশকের পর থেকে বিগত বছরগুলোতে খাদ্যনালির ক্যানসার প্রায় ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অ্যাসিড সমস্যার জন্য ভুক্তভোগীরা সাধারণত যেসব ওষুধ সেবন করেন, সেগুলো বেশি দিন ব্যবহার করলে ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়তে পারে।

৩. কেন অ্যাসিড সমস্যা হয়? চিকিত্সাবিজ্ঞানীরা বলেন, এর একটি কারণ হতে পারে খাদ্যতালিকায় চিনি ও চর্বিসমৃদ্ধ এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের বাড়াবাড়ি। অপর একটি কারণ হতে পারে খাওয়ার সময়কাল। বেশি রাতে খাওয়ার সঙ্গে খাদ্যনালির ক্যানসারের একটি সম্পর্ক থাকতে পারে।

৪. যুক্তরাষ্ট্রে আজকাল অনেকে বেশি রাত পর্যন্ত কাজ করেন। সকালে অনেকে নাশতাই করেন না, দুপুরে সামান্য স্যান্ডউইচ। এরপর বেশি রাতে ভরপেট খেয়ে সোফায় শুয়ে টেলিভিশন দেখে ঘুম! এর ফলে অ্যাসিড ঢেকুরের প্রকোপ বাড়ে। কারণ সোজা হয়ে বসে কাজ করলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পাকস্থলীতে খাদ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু শুয়ে থাকলে খাদ্য পরিপাকে নিঃসৃত অ্যাসিড সহজে উপচে গলার দিকে চলে আসতে পারে।

৫. তাই ঘুমানোর অন্তত তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিলে এসব সমস্যা অনেক কমে যায়। এ জন্য খাদ্যাভ্যাস বদলানো দরকার। কাজটা কঠিন। কিন্তু দুঃসাধ্য নয়। চলুন না ফিরে যাই আমাদের চির প্রচলিত গ্রামের সংস্কৃতিতে। সকালে ভরপেট, দুপুরে মোটামুটি, আর সন্ধ্যায় অল্প খাওয়া। এরপর ঘণ্টা তিনেক জরুরি কিছু কাজ সেরে নেওয়া যায়, তারপর ঘুম!।



মন্তব্য চালু নেই