জাবিতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আদিবাসী ছাত্র সংগঠন’ খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলায় অন্যায়ভাবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৭০০ একর জমি পর্যটনের নামে উচ্ছেদের প্রক্রিয়ার প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন পালন করেছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী ছাত্র সংগঠন বা ‘ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন’ এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন পালন করে।
বিক্ষোভ মিছিলটি সকাল সাড়ে ১০টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে অমর একুশে ও নতুন কলা প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। এরপর পরবর্তী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদ মিনারের পাদদেশে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে সংহতি প্রকাশ করে বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন অর রশীদ বলেন, “পার্বত্য চট্রগ্রাম মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ আলুটিলায় এই বিশাল জায়গা অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত নিলে এই এলাকায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। তাদের জীবিকা নির্বাহ অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়বে। সেখানে বণিকবৃত্তি গোষ্ঠীর এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তৎপরতা বেড়ে যাবে। যা কখনও কাম্য হতে পারে না। প্রশাসনের এরকম অন্যায় সিন্ধান্তের প্রতিবাদ জানিাচ্ছি। সেই সাথে প্রশাসনকে দ্রুত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য আহবান জানাচ্ছি।”

এসময় জাবির ‘আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের’ সভাপতি প্রতাপ কুমার কোচ বলেন, আমরা আদিবাসী সম্প্রদায় বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসছি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য যেমন অমানবিক, তেমনি এখানাকার জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ। তাই অবিলম্বে আলুটিলায় অন্যায়ভাবে জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া বন্ধ করে, সংশোধিত ভূমি কমিশন আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতীম তনচঙ্গা পিয়ার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সভাপতি মাসুক হেলাল অনিক ও সাধারণ সম্পাদক মাহাথির মোহাম্মদ এবং ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক অলিউর রহমান সান।

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্রগ্রামের তিন জেলা রাঙ্গামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে বর্তমানে পর্যটন শিল্পের বিকাশের নামে আদিবাসীদের জমি অধিগ্রহনের মাধ্যমে তাদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছে পাবত্য চট্রগ্রাম মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ। পর্যটনের নামে অধিকৃত জমিগুলোকে ব্যক্তিমালিকানাবিহীন বা খাস জমির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। যার অংশ হিসেবে সম্প্রতি খাগড়াছড়ির আলুটিলায় ৭০০ একর জমি অধিগ্রহনের মাধ্যমে ৫০০-৬০০টি পরিবারকে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই