পৌরসভা নির্বাচন

জামায়াতকে নিয়ে ধোঁয়াশায় বিএনপি

নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই জামায়াতে ইসলামীর। তবে দলের নেতারা চেষ্টা করলেন নানা কৌশলে নিজেদের প্রার্থীদেরকে নির্বাচনী মাঠে রাখতে। অন্যদিকে তাদের শরিক বিএনপি বলছে, যেহেতু জামায়াতের নির্বাচনের সুযোগ নেই, সেহেতু তাদের দলের প্রার্থীদেরকে সমর্থন দিতে হবে দলটিকে।

বিএনপি এখন পর্যন্ত সব পৌরসভায় একক প্রার্থী দেয়ার কথা জানালেও জোটের অন্য শরিক দলগুলো চায়, কোথাও কোথাও তাদের প্রার্থীকে সমর্থন দিক বিএনপি। এ জন্য জোটের প্রধান দলটির কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকাও দিয়েছে তারা। কিন্তু জামায়াত এখনও তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম জানায়নি বিএনপিকে। ফলে জামায়াত কী করতে যাচ্ছে, সে নিয়ে অনেকটাই ধোঁয়াশায় জোটের প্রধান দলটির নেতারা। নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে কতটা সমন্বয় করা যাবে তা নিয়ে্ও সংশয়ে বিএনপি।

বিএনপি ও জোটের একাধিক সূত্র জানায়, ২০-দলীয় জোটের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কোথাও যাতে জোটের একাধিক প্রার্থী না হয়, সে বিষয়ে তারা সচেষ্ট থাকবে। তবে জামায়াত কী কৌশলে নির্বাচনে অংশ নেবে, তা পরিষ্কার করেনি বৈঠকে।

আইন অনুযায়ী জোটের পৌর নির্বাচনে জোটবদ্ধ এক দলের প্রার্থী অন্য দলের প্রতীকে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। ফলে জামায়াত বাদে বিএনপির অন্য শরিকরা জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিলেও পৌর নির্বাচনে দলগুলোকে ভোটে অংশ নিতে হবে নিজ প্রতীকে। তাই ধানের শীষের বদলে অন্য প্রতীকে নির্বাচন করলে ভোটের লড়াইয়ে কোন সমস্যা হবে কি না, সে নিয়ে চিন্তিত বিএনপি।

জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, ২৩৪টি পৌরসভার মধ্যে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান আছে, কেবল এসব এলাকায় প্রার্থী হতে ইচ্ছুক জামায়াতের নেতারা। অন্য এলাকায় জোটের প্রার্থীকে সমর্থন দেবে তারা।

তালিকা জমা দেয়া শরিকরা শেষ সময়ে নিজেদের প্রার্থীর নাম বাদ গেলেও আপত্তি থাকবে না বলে বিএনপিকে জানিয়ে দিয়েছে। এদের মধ্যে দুই একটি পৌরসভায় প্রার্থী রাখার ব্যাপারে এলডিপির কিছুটা শক্ত অবস্থানে থাকার সম্ভাবনা আছে।

বিএনপির নির্বাচনী কার‌্যক্রম তদারকির দায়িত্বে আছেন এমন এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নিবন্ধন না থাকায় জামায়াত কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। বিএনপির সঙ্গে সমন্বয় করে একটি তালিকা রাখবে, আবার বেশিরভাগ জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থীও রাখবে। কারণ তাদের তো কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থী দেয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল আছে ১০টি। জানা গেছে, এসব দলের মধ্যে জাগপা পাঁচটি, কল্যাণ পার্টি ১১টি, ন্যাপ ছয়টি পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী দেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে বিএনপিকে তালিকা দিয়েছে। এলডিপিও তালিকা তৈরি করলেও জমা দিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরবাইরে অন্যরা প্রার্থী দিতে চাইলেও দর-কষাকষিতে রাজি নন।

জোটের অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, বিএনপি ২০ থেকে ২৫টি পৌরসভায় জামায়াতকে ছাড় দিতে চায়। অন্যদিকে জামায়াত উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের সাফল্যকে সামনে রেখে ৭০-৮০টির পৌরসভার কথা চিন্তা করছে। তবে এখনো এ নিয়ে দুই দল সমন্বয়ে আসতে পারেনি।

বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল প্রার্থী তালিকা জমা দিয়েছে। তবে জোটের স্বার্থে এ বিষয়ে ছাড় দিতে রাজি আছি।’

কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত ছাড়া অন্য দলগুলোর তালিকা ছোট। তবে বিএনপিকে মূল সমন্বয় করতে হবে জামায়াতের সঙ্গে। সেটা কতটা সম্ভব হবে তা হয়তো সময় বলে দেবে।’ ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই