জামায়াতের নতুন আমিরের বিরুদ্ধে যেকোনো সময় মামলা

জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা দায়েরের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান। এ পর্যন্ত মকবুলের বিষয়ে যেসব তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতেই মামলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আবদুল হান্নান খান বলেন, ‘ইতোমধ্যে তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। শিগগির মামলা হবে। তবে দিন তারিখ না বলাই ভালো।’ শিগগির বলতে কতদিন প্রশ্নে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘সবই গুছিয়ে আনা হয়েছে। বিজয়ের মাসে আপনারা ভালো খবর পেতে পারেন।’

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা যায়, রাজাকার তালিকায় মকবুল আহমাদের বিষয়ে নতুন করে মামলা নথিভুক্ত হবে। আগামী মাসেই এসব সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।

জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হওয়ার পরই ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দলটির নায়েবে আমির মকবুল আহমাদকে। দীর্ঘদিন তিনি ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর চলতি বছরের অক্টোবর মাসে জামায়াতের নতুন আমির হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধে একের পর এক শীর্ষনেতার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের পর ‘ক্লিন ইমেজ’ নিয়ে নতুন আমির গঠন করেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না সংগঠনটির। সম্প্রতি আমির নির্বাচিত মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধেও পাওয়া গেছে মুক্তিযুদ্ধকালে সাধারণ মানুষকে নির্যাতনের ভয়াল চিত্র।

জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদের মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কমিটি গত ৭ থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ ও অনুসন্ধান করেছে।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিকল্পনাকারী ও নিদের্শদাতা হিসেবে কেবল না, তাকে (মকবুল) সরাসরি অপরাধের অভিযোগেরও অভিযুক্ত করা হতে পারে। দালিলিক প্রমাণাদি বিশ্লেষণও শেষ পর্যায়ে। তবে প্রধান সাক্ষী নির্ধারণ সম্ভব হওয়ায় এখন আর তেমন কোনও দ্বিধার সুযোগ নেই।’

এদিকে তদন্ত সংস্থা সূত্র বলেন, নিয়মানুযায়ী চিফ প্রসিকিউটর আনুষ্ঠানিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের সব মামলারই বাদী হয়ে থাকেন। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগকারী হিসেবে একজনকে দরকার হয়। সেটাও তদন্ত সংস্থা নির্ধারণ করতে পেরেছে।

রাজাকার তালিকায় নাম থাকার পরও এতদিন স্বউদ্যোগে কেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থা ব্যবস্থা নেয়নি প্রশ্নে সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান বলেন, ‘তার নাম রাজাকার তালিকায় আছে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত সংগঠনের বিষয়ে তদন্ত করিনি। ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দরকার। সম্প্রতি পত্রিকায় মকবুলের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদকে আমলে নিয়ে আমরা প্রাথমিক তদন্তে এলাকায় যাই। এবং এলাকার মানুষ তদন্ত দলের কাছে তার মানবতাবিরোধী অপরাধের নানা তথ্য তুলে দিয়েছে এবং তাদের মধ্য থেকেই প্রধান অভিযোগকারী পাওয়া গেছে।’

অভিযোগ তদন্তে প্রথম গত ৮ নভেম্বর তদন্ত সংস্থার সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনিয়া লালপুর গ্রামের পাল বাড়িতে যায়। তারা পালবাড়ি পরিদর্শন ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেছেন।খবর বাংলা ট্রিবিউনের।



মন্তব্য চালু নেই