জামায়াত নিধনে মোক্ষম সময়ের অপেক্ষায় সরকার

স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সরকার আরো কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে উৎখাতের লক্ষ্যে সরকার এ বছরই সংগঠনটির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।

জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার পরিকল্পনা সরকারের তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে আদালত বা নির্বাহী আদেশেও দলটি এ বছর নিষিদ্ধ হতে পারে। যার ইঙ্গিত স্বরুপ রাজনৈতিক দল হিসেবে ইতোমধ্যেই জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি চিরতরে নিশ্চিহ্ন করতে চাই। দেশবিরোধী সংগঠন জামায়াতের রাজনীতি নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তি নেই। আমরা সে পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছি।

মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে জামায়াতকে একটি ‘ক্রিমিনাল সংগঠন’বলা হয়। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে দল হিসেবে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবি জোরালো হয়ে উঠলে প্রসিকিউশন তদন্তও শুরু করে। কিন্তু ব্যক্তির পাশাপাশি দল বা সংগঠনের বিচারে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো না থাকায় বিষয়টি আটকে থাকে।

এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, আইন সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত, শিগগিরই তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। কিন্তু বছর গড়িয়ে গেলেও এর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

সূত্র জানায়, সরকার পরিস্থিতি বিবেচনা করেই জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই অনুকূলে বলে সরকার দলীয় লোকজন মনে করছেন।

সূত্র আরো জানায়, যুদ্ধাপরাধ এবং রাজনীতির নানা ইস্যুতে জামায়াতকে অনেকটাই কোণঠাসা করতে পেরেছে বলে মনে করছে সরকার এবং আওয়ামী লীগ । বিএনপির ওপর ভর করে জামায়াত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করলেও বিএনপিই এখন সরকারের নানা কৌশলে ধরাশায়ী। জোটবদ্ধ থাকলেও বিএনপি নিজেও জামায়াতকে এড়িয়ে চলতে চাইছে।

বিশেষ করে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরপরই উপজেলা নির্বাচন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌর এবং আসন্ন ইউপি নির্বাচনে জামায়াতের অবস্থানে বিএনপি বিস্ময় প্রকাশ করে।

সর্বশেষ উপজেলা ও পৌর নির্বাচনে জামায়াতের ফলাফল তুলনামূলক ভালো হওয়ায় আওয়ামী লীগের মধ্যেও অস্বস্তি কাজ করছে বলে সূত্রে জানা গেছে। আর এ কারণেই সরকার জামায়াত মোকাবিলায় নির্বাহী সিদ্ধান্তকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্প্রতি নির্বাচনগুলোয় জামায়াতের ফলাফল সত্যিই অবাক করেছে। তাই স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠনটিকে আর কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যায় না। এখন সরকারের সুবর্ণ সুযোগ জামায়াতের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এবং সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাই করতে যাচ্ছে।

জামায়াত বর্তমানে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের কোমর ভেঙে দেয়া হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জামায়াতকে আর কখনই সোজা হয়ে দাঁড়াতে দেয়া হবে না। জামায়াতের রাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তও আসন্ন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় এসে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে বদ্ধপরিকর। শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর কোনো অপশক্তি যেন এগিয়ে যাওয়ার সেই গতি থামাতে না পারে, সে জন্য প্রস্তুত রয়েছে আওয়ামী লীগ।জাগো নিউজ



মন্তব্য চালু নেই