জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন পেশাদার দুই ডাকাত!

রাজধানীতে ডাচবাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের প্রায় এক কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিকারী পেশাদার দুই ডাকাত জামিনে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। তারা হলেন, নরসিন্দীর রায়পুরা থানার কাচারকান্দি গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে আলামিন ইসলাম ওরফে মানিক ওরফে রবিন এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কুটুরিয়া গ্রামের আব্দুল্লাহ ওরফে আব্দুল ওরফে সাদ্দাম ওরফে আরিফ।

রাজধানীর তেজগাঁও থানার ৪৯(১২)১৪ নম্বরের ওই মামলায় গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. তসরুজ্জমান তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

জানা গেছে, এই আসামিরা পেশাদার ডাকাত। তারা এই মামলাটিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হন এবং গত ১০ ফেব্রুয়ারি তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এই রিমান্ডের পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি তারা ডাকাতে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সূত্র জানায়, উল্লিখিত আসামিরা তেজগাঁও থানার ৪৯(১২)১৪, রমনা ২৮(১)১৫ নম্বর মামলাসহ চকবাজার, যাত্রাবাড়ী, বংশাল থানায়ও একাধিক মামলাসহ ১৪/১৫টি ডাকাতির মামলার আসামি। তেজগাঁও থানার ৪৯(১২)১৪ নম্বর মামলায় জামিনের পূর্বে অন্যান্য মামলায় তাদের গত ঈদের পূর্বে জামিন মঞ্জুর হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় বুধবারই তারা জামিনে মুক্ত হতে পারেন।

উল্লেখ্য, তেজগাঁও থানার ৪৯(১২)১৪ নম্বর মামলার আসামি আলামিন ইসলাম ওরফে মানিক ওরফে রবিন এবং আব্দুল্লাহ ওরফে আব্দুল ওরফে সাদ্দাম ওরফে আরিফ ছাড়াও মো. ইয়াছিন এবং মো. হাচান নামে আরও দুইজন আসামি রয়েছেন। আসামি ইয়াছিন এবং হাচান একই সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তি না করলেও এখানও জামিন পাননি। তাই স্বীকারোক্তিকারী দুই আসামির জামিন হওয়া নিয়ে আদালতে নানান গুঞ্জন চলছে।

আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিকৃত ১৫ লাখ টাকা, ডাকাতিতে ব্যবহৃত ২টি চাপাতি ও ২টি ছুরি উদ্ধার হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা শহরে ডাচ ব্যাংলা ব্যাংকের ২২টি ফার্স্ট ট্র্যাক এটিএম বুথে তিন কোটি ৯২ লাখ টাকা লোড করার জন্য ঢাকা মেট্টো-ঠ-১১-৭৫৫৪ মাইক্রোবাসটিতে উক্ত টাকা নিয়ে গ্রুপ-৪ সিকিউরিটির ৫ জন অফিসার বের হন। সব বুথে টাকা লোড করার পর সর্বশেষ তেজগাঁও থানাধীন সোনারগাঁও রোড ক্রোসিং সংলঘœ সুমনা গণি ট্রেড সেন্টারের নিচ তলায় অবস্থিত ফার্স্ট ট্র্যাক এটিএম বুথে টাকা লোড করার জন্য রাত ৩টা ৩০টার সময় উক্ত বুথে সিনিয়র অফিসার আবুল খায়ের, আবু সায়েদ, কাজী আশিকুজ্জামান, বাচ্চু মিয়া ও আজিজুল ইসলাম বুথে ঢোকেন। আবুল খায়ের, আবু সায়েদ বুথে টাকা দিয়ে বের হওয়া মাত্র দুজন আবুল খায়েরের গলায় চাকু ধরে বলেন, কথা বললে জবাই করে ফেলব বলে মোবাইলসেট নিয়ে নেয়।

অন্যদিকে টাকা থাকা মাইক্রোবাসের ড্রাইভারের গলায় একজন ডাকাত চাকু ধরেন এবং গাড়ির চাবি নিয়ে নেন। আরেকজন ডাকাত বুথে প্রবেশ করলে ভেতরে থাকা কাজী আশিকুজ্জামানসহ তিনজন ভয়ে বাথরুমে ও সার্ভার রুমে আত্মগোপন করেন। ওই সময় ফার্স্ট ট্র্যাকের বুথের ফ্লোরে থাকা ৯২ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা ভর্তি বক্স নিয়ে উক্ত ডাকাত বেরিয়ে নীল রংয়ের একটি ট্রাকে করে অন্যান্য ডাকাতরাসহ পালিয়ে যায়।

ওই ঘটনায়, গ্রুপ-৪ সিকিউরিটির ডেপুটি ম্যানেজার মো. শাহ আলম তেগাঁও থানায় ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলা করেন।



মন্তব্য চালু নেই