গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম

জাল টাকাসহ ৪ পুলিশ আটকের জের: ২০২ জনকে অভিযুক্ত করে দুটি মামলা

মাসুদ আলম, কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার ‘হায়দারাবাদ বাজারে জাল টাকাসহ চার পুলিশ সদস্যকে স্থানীয় জনতা আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলা দুটিতে হায়দরাবাদ গ্রামের ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এমনকি অজ্ঞাতনামা আরো ১শত ৮০ জনসহ মোট ২০২ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরর পর গ্রেফতার আতঙ্কে ওই গ্রাম শুধু পুরুষশূন্যই নয়, অধিকাংশ পাড়া নারীশূন্য হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।

ঘটনার পর প্রতি রাতে পুলিশি অভিযানের সংবাদ চারদিকে চড়িয়ে পড়লে হায়দারাবাদ বাদামতলী বাজার’র সকল ব্যবসায়ীরা দোকান পাঠ বন্ধ করে নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে বিভিন্ন এলাকা থেকে কেনা-কাটা করতে আসা ক্রেতারা পড়ছেন বিপাকে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এ,এস,আই) মোসলেম উদ্দিন’র নেতৃত্বে একদল পুলিশ হায়দরাবাদ বাদামতলী বাজারে জামিলা ভেরাইটিজ স্টোর্স’এ গিয়ে বডি-সপ্রে কিনতে চায়। এ সময় দোকানের মালিক সোহেল রানা বডি-সপ্রে আনতে দোকানের এক পাশে যেতেই পুলিশের সাথে থাকা ২ লাখ টাকার জ্বাল নোটের একটি ব্যাগ তার ক্যাশ বাক্সের পাশে রাখে। তখন বাইরে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এ,এস,আই) মোসলেম উদ্দিন দোকানের ভেতর প্রবেশ করে দোকান মালিক সোহেলকে জ্বাল টাকা রাখার অভিযোগে আটক করেন। আটক দোকান মালিক সোহেল বাদামতলী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি ওই গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে। এদিকে সোহেল রানাকে আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই সহগ্রাধিক বিক্ষুব্ধ জনতা জ্বাল টাকাসহ চার পুলিশ সদস্যকে আটক করে এবং পুলিশের কাছ থেকে সোহেলকে মুক্ত করে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এসে আটক পুলিশ সদস্যদের জনরোষ থেকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে বসিয়ে রেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। প্রায় দু’ঘন্টা পর বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার উপর নির্বিচারে লাঠি চার্জ, গুলি চালিয়ে এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে জ্বাল টাকাসহ আটক পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এসময় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের ছুঁড়া গুলিতে এক বৃদ্ধাসহ আহত হয়েছেন অন্তত দশজন।আহতদের মধ্যে মাসুদা আক্তার নামে একজন গুরুর আহতনারীকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেয়াহয়।ওই ঘটনায় এলাকাবাসীকে আসামি করে উল্টো পুলিশই মামলা দায়ের করে।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে সেল ফোনে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাদামতলী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা অজ্ঞাত স্থান থেকে সেল ফোনে জানান, মামলা দায়ের করব আমরা নির্যাতিত জনতার পক্ষে, অথচ উল্টো মামলা দিয়ে পুলিশ আমাদের হয়রানী করছে। বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ ঘটনার সাথে সকল পুলিশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আরো বলেন, দু/এক দিনের মধ্যে মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করবেন বলেও জানান।



মন্তব্য চালু নেই