এখনো শনাক্ত হয়নি ঘাতকরা

জিজ্ঞাসাবাদ আর ঘটনাস্থল পরিদর্শনেই এক মাস

সোহাগী জাহান। তনু নামেই সমধিক পরিচিতি যার। তনু হত্যা মামলার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল পুরো দেশব্যাপি। গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে হত্যাকাণ্ডের পর বুধবার (২০ এপ্রিল) পর্যন্ত এক মাসে মামলার দৃশ্যমান অগ্রগতি অনেকটা শূন্যের কোটায়। পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি, সিআইডি, পিবিআইসহ সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার গলদঘর্ম দৌড়ঝাঁপেও ঘাতকরা এখনো শনাক্ত হয়নি।

কারা এবং কেন খুন করেছে তনুকে সেই হিসাবের যোগ-বিয়োগের অংকের ফলাফল বের করতে পারছে না মামলার তৃতীয় তদন্ত সংস্থা সিআইডি। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ আর ঘটনাস্থল পরিদর্শনেই সীমাবদ্ধ বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডটি। এদিকে মামলার তদন্ত সহায়ক দলের কুমিল্লায় অবস্থানের ২য় দিনে বুধবার দুপুরে ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কুমিল্লা ত্যাগ করেছে তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান সিআইডির সিনিয়র পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

জানা যায়, মামলার রহস্য বের করতে সিআইডিকে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হচ্ছে। তাই এরইমধ্যে সিআইডি সন্দেহভাজনদের মোবাইল কললিস্ট, মোবাইলের ভয়েস রেকর্ড, সেনানিবাসের সিসিটিভির ফুটেজ, তনুর ৪টি মোবাইলের কল রেকর্ড, ফেসবুকের স্ট্যাটাস এবং ডিএনএ আলামত থেকে ঘাতকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সিআইডি সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে এক মাসেও তনুর ঘাতকরা গ্রেফতার না হওয়ায় বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে প্রতিবাদী নারী সমাজ।

অপরদিকে মামলার তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান সিআইডি ঢাকার সিনিয়র বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তনুর চাচা-চাচিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বুধবার দুপুরে কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সিআইডি সূত্র জানায়, মামলার তদন্তের স্বার্থে তনুর চাচা আলাল হোসেন, চাচি সাজেদা বেগম, তনুর গ্রামের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম কোদাল কাটার ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও তনুকে উত্ত্যক্তকারী সেনানিবাস এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিয়ারের বন্ধু জিদনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ বিষয়ে তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান আবদুল কাহ্হার আকন্দ বুধবার কুমিল্লা ত্যাগের আগে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা ইতিমধ্যে আমরা অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, প্রাপ্ততথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি, আশা করছি এনিয়ে দ্রুত একটা সমাধানে আসতে পারবো, ফলাফল পেলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।’

তনুর পরিবারকে কেন বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তনুর পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, তদন্তের তথ্যের জন্য তাদের সঙ্গে বারবার কথা বলছি।’

জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তনুর চাচা আলাল হোসেন বলেন, ‘কীভাবে তনু মরলো তা আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, আমরা গ্রামের বাড়িতে থেকে এটা কিভাবে বলবো।’



মন্তব্য চালু নেই