জিৎ সম্পর্কে যা বললেন শাকিব

অনেক পারিশ্রমিক আর বিভিন্ন শর্ত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি করছেন কলকাতার অভিনয়শিল্পীরা। জানা গেছে কলকাতার নায়ক জিৎ যৌথ প্রযোজনার ছবি থেকে এক কোটি টাকা নিচ্ছেন। এমনটাই জানালেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি বাংলাদেশের সুপার স্টার শাকিব খানেরও অজানা নয়। তবে বিষয়টিকে সমর্থন করেন শাকিব।

জিতের কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেওয়া প্রসঙ্গে শাকিব খান বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি, জিতের সাথে অনেক দিন ধরেই আসলে কথা হচ্ছিল। পারিশ্রমিক, শুটিং লোকেশন, পরিচালক, সহশিল্পী, মেকিংয়ের সব বিষয়ে তিনি আলাদা করে শর্ত দিয়েছেন। প্রথমে যাঁরা কথা বলতে গিয়েছিলেন তাঁরা হতবাক হয়ে হয়েছিলেন।

তারপর সব শর্ত মেনেই তাঁকে নেওয়া হচ্ছে। এটা করে আসলে জিৎ ঠিকই করেছেন। এজন সুপাস্টার যখন একটি ছবিতে যুক্ত হন, তখন তাঁকে ঘিরে সবার মাঝে স্বপ্ন তৈরি হয়। যে কারণে তাঁকে পুরো বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়। একজন মানুষ যখন শিল্পী থেকে তারকা আবার সেখান থেকে সুপার স্টার পর্যন্ত হন ততদিনে সবকিছু নিয়ে পূর্ণ ধারণাও হয়ে যায় তাঁর। নিজের অবস্থান ধরে রাখতেই সব বিষয়ে পারফেক্ট করতে চাইবে একজন সুপারস্টার। কোনো ফাঁক রেখে কাজ করলে সেটা পর্দায় দেখা যাবে। মনে রাখতে হবে ছবিই কিন্তু স্টার বা সুপারস্টার বানায়।’

সম্প্রতি একটি যৌথ প্রযোজনার ছবি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাকিব খান। এ ক্ষেত্রে কি জিতের মতোই তিনি শর্ত জুড়ে দেবেন? উত্তরে শাকিব বলেন, ‘শর্ত আসলে একই ধরনের, আমার বেলায় একটা বেশি, সেটি হলো যৌথ প্রযোজনার আইনটাও মানতে হবে। আসলে কোনো বিষয়ে কোনো আপস করলে চলচ্চিত্রেরই ক্ষতি হবে।’

যৌথ প্রযোজনার ছবি থেকে পারিশ্রমিক নেওয়া প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশের ছবিতে আমি যে টাকা নেই এ ক্ষেত্রে তারচেয়ে বেশি নেব। কারণ বাংলাদেশে ছবি করতে যে পরিশ্রম ও সময় লাগে এখানে তারচেয়ে সবকিছুই বেশি করতে হবে। যৌথ প্রযোজনার ছবির মান যদি আমাদের ছবির চেয়ে ভালো কিছু না হয়, তাহলে তো আমি করব না। আর ভালো কিছু করতে গেলে সময়ও একটু বেশি লাগবে।’

ইদানীং ভালো ছবি তৈরি হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে, এমনকি শাকিব খানের ছবির মানও আর ভালো হচ্ছে না বলে আক্ষেপ রয়েছে দর্শকদের। এর কারণ কী জানতে চাইলে শাকিব বলেন, ‘দুই বছর আমি ছবি বেশি করেছি, প্রযোজক পরিচালক সহশিল্পীদের দিকে তাকিয়ে ছবি বেশি করেছি। এর আগে আমি একটা ছবি করার আগে তার পুরোটা কীভাবে, কী হবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতাম। গান, লোকেশন, প্রপস পছন্দ না হলে ছবি করিনি।

এতে ছবির খরচ বেড়েছে আবার তা লাভসহ উঠেও এসেছে। কিন্তু সবার ছবি যখন ফ্লপ হতে শুরু করল তখন আমাকে এসে সবাই ধরল, অনেক ছবি করতে হবে। তারা বলল, সব বিষয়ে নাক না গলিয়ে শিডিউলটা ঠিক রেখে কাজ করলেই চলচ্চিত্র দাঁড়িয়ে যাবে। আমি তাদের কথা মতো চলে দেখেছি, এই দুই বছরের মধ্যে আমি যে ছবি গুলোতে কঠোর ছিলাম সেগুলোই ব্যবসা সফল হয়েছে। আমি এই কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বছরে পাঁচ-ছয়টির বেশি ছবি করব না। এবং তার প্রত্যেকটা বিষয়ে আমি সতর্ক থাকব। এভাবে ঢালাওভাবে ছবি আর করছি না।’

দর্শকের পাশাপাশি পরিচালকদেরও অভিযোগ কম নয়। তাঁরা বলেন, শাকিব খান সময় মতো সেটে আসেন না, সকালে শুটিং থাকলে আসেন সন্ধ্যায়। এসব অভিযোগের উত্তরে শাকিব বলেন, ‘বেশি ছবি করার কারণেই আসলে এমনটা হয়েছে। অনেকদিকে খেয়াল রাখতে পারিনি। বিশ্বাস করে কাজে হাত দিয়েছি, কিন্তু শুটিং করতে গিয়ে দেখি কোনো কিছু ঠিক নেই। এসব দেখলে তখন আর ঠিক মতো সময় দিতে ভালো লাগে না। আবার মৌলিক গল্প নিয়ে যাঁরা ভালো ছবি নির্মাণ করেছেন তাঁদের ছবিতে উৎসাহ নিয়ে সময় দিয়েছি।’

অভিনয় করতে গেলে গল্প অনুযায়ী একজন অভিনয়শিল্পীর প্রস্তুতি নিতে হয়, তাই অনেক সময় শিডিউল ঠিক রাখা যায় না বলে জানান শাকিব খান।



মন্তব্য চালু নেই