জেনে নিন আমেরিকার কিছু ধনী পরিবারের কথা

যখন থেকে মানব সমাজ গঠিত হয়েছে তখন থেকেই সমৃদ্ধশালী পরিবারগুলোই বিশ্বের আধিপত্য করে আসছে। ফেরাউন থেকে শুরু করে গ্রিক-রোমান শাসকদের রাজত্বকাল পর্যন্ত দেখা যায় যে, অনেক সম্রাটই পুরো পৃথিবীর অর্ধেক অংশের অধিপতি ছিলেন। আধুনিক সমাজের গোড়াপত্তনের সাথে সাথে সম্পদ অর্জনের জন্য শারীরিক শক্তির প্রয়োগ অচল হয়ে পড়ে। বর্তমানে বহুজাতিক কোম্পানি ও কর্পোরেট হাউজগুলো বিশ্বের অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমান যুগে আমেরিকার বহু পরিবার যেমন- রকফেলার, মেলন্স ও কেনেডি পরিবার ব্যবসার মাধ্যমে নজিরবিহীন সম্পদের অধিকারী হয়েছে। অনেক পরিবার তাদের সম্পদের বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে আবার অনেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত তাদের বাবা-দাদার সম্পত্তি ভোগ করছে। আসুন জেনে নেই আমেরিকার কিছু ধনী পরিবারের কথা।

১। ওয়াল্টন পরিবার

বর্তমান বছর গুলোতে ওয়াল্টন পরিবার ফোর্বস এর করা বিশ্বের ধনী পরিবার গুলোর তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। এই পরিবারটি তাদের এই সৌভাগ্যের অধিকারী হয়েছে স্যাম ওয়াল্টন এর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের দ্বারা যিনি বিশ্বের সবচাইতে বড় রিটেইলার শপ ওয়ালমারট এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এই রিটেইল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৬২ সালে। বিশ্বের ২৭টি দেশে ১১০০০ দোকান আছে ওয়ালমারট এর। ৫৫টি ভিন্ন ভিন্ন নামে এটি পরিচালিত হয় যেমন- যুক্তরাজ্যে Asda, জাপানে Seiyu. ওয়ালমারট এর সকল শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ওয়াল্টন পরিবার সম্মিলিতভাবে ৫০% শেয়ারের মালিক যার মূল্য ১৫২ বিলিয়ন ডলার। ওয়াল্টন পরিবারের জীবিত তিনজন সদস্য রব, জিম ও এলিস নিয়মিত ভাবেই ফোর্বস এর ধনী পরিবারের তালিকার শীর্ষ ১০ এর মধ্যে আছেন ২০০১ সাল থেকে। ফোর্বস মতে জিম একাই ৩৪.৭ বিলিয়ন ডলারের মালিক।

২। কচ পরিবার

কচ ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ফ্রেড সি কচ এর সম্পত্তির উত্তরাধিকারীরাই কচ পরিবারের সদস্য। ফ্রেড ভারী তেলকে পেট্রলে রূপান্তরের পদ্ধতি উদ্ভাবন করার পরে এই তেল শোধনাগার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তারপরেই তার ধন সম্পদের উন্নতি হতে শুরু করে। ফোর্বসের মতে কচ ইন্ডাস্ট্রি আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি। কচ পরিবারের জীবিত সদস্য চার্লস জি কচ ও ডেভিড এইচ কচ, কচ ইন্ডাস্ট্রির ৪২% শেয়ারের মালিক যার মূল্য ৪০ বিলিয়ন ডলার। কচ ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি এই পরিবারের কচ ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আছে। যার শুরু হয়েছিলো ফ্রেড এবং মেরী কচ ফাউন্ডেশন নামে ১৯৫৩ সালে। তারপরে চার্লস কচ ফাউন্ডেশন, ডেভিড এইচ কচ চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন এবং কচ কালচারাল ট্রাষ্ট যুক্ত হয়। ফোর্বসের মতে এই পরিবারটি সম্মিলিতভাবে ৮৯ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক।

৩। মার্স পরিবার

মার্স পরিবারের কর্ণধার ফ্রাঙ্ক সি মার্স। তিনি বৃহৎ মার্স কনফেকশনারির প্রতিষ্ঠাতা। ফোর্বসের প্রতিবেদন অনুযায়ী আমেরিকার ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি গুলোর মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম হচ্ছে মার্স কোম্পানি, ২০১২ সালে এদের বার্ষিক বিক্রি হয় ৩০ বিলিয়ন ডলার। এখন পর্যন্ত মার্স পরিবারই মার্স কোম্পানির মালিক, এখানে জনসাধারণের কোন শেয়ার নেই। পৃথিবী বিখ্যাত এনার্জি বার, স্নিকার এবং সবচেয়ে বেশি বিক্রিত কুকুরের খাদ্য এই মার্স এর পণ্য। ১৯৮৮ সালে মার্স পরিবারকে আমেরিকার সবচেয়ে ধনী পরিবার হিসেবে নামকরণ করে ফরচুন ম্যাগাজিন। মার্স পরিবার পারিবারিক গোপনীয়তার বিষয়ে খুবই কঠোর, তারা কখনো কোন সাক্ষাৎকার দেয়নি। এই পরিবারের সকল সদস্যের সম্মিলিতভাবে ৬০ বিলিয়ন ডলার সম্পদ আছে।

এছাড়াও ব্রাউন পরিবার ১১.৬ বিলিয়ন ডলারের মালিক, মেলন পরিবার ১২ বিলিয়ন ডলারের মালিক, ডোরেন্স পরিবার ১২.৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক, বুচ পরিবার ১৩ বিলিয়ন ডলারের মালিক।



মন্তব্য চালু নেই