জেনে নিন, কোন ক্রিকেটার কোন পেশায় নিয়োজিত

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে সকল ক্রিকেটার খেলাধুলা করে তারা সবাই তারকা এবং তাদের অসংখ্য ভক্ত-সমর্থক থাকে। কিন্তু এই ভক্ত সমর্থকের মধ্যেও জনপ্রিয়তার কারণে অনেক ক্রিকেটার আছে ক্রিকেটার বাইরে কোন কাজ করেন না, আবার অনেকে আছে এই ভক্ত-সমর্থকদের জনপ্রিয়তাকে তোয়াক্কা না করে বাক্তিগত কাজে লেগে পড়েন।

আজ আমরা জেনে নিব কোন ক্রিকেটার ক্রিকেটের বাইরে তাদের জনপ্রিয়তাকে ভুলে গিয়ে কোন পেশায় ছিলেন অথবা চালিয়ে যাচ্ছেন।

১. মাহেন্দ্র সিং ধোনি:

মাহেন্দ্র সিং ধোনি ভারতীয় ক্রিকেটের সব থেকে সফল অধিনায়ক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ক্রিকেটার বাইরে তিনি আরও পেশা চালিয়ে গেলেও সম্প্রতি একটি পেশার মধ্যে আছেন। ক্রিকেটে আসার আগে এই সফল অধিনায়কের একটা সাফল্যের গল্প আছে। ধোনি ২০০১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ভারতীয় রেলওয়ের খারাগপুর রেলওয়ে স্টেশনের ট্রেন টিকেট চেকারের দায়িত্বে ছিলেন। পরে দলে ফিরলে সেই পেশায় না ফিরে গেলেও বর্তমানে ধোনি ক্রিকেটের পাশাপাশি ভারতীয় আর্মিতে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২. এবিডি ভিলিয়ার্স:

বর্তমান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফর্মেটের সবচেয়ে মারকুটে এবং অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের নাম এবিডি ভিলিয়ার্স। শুধু ক্রিকেটের তিন ফর্মেটেই নয়, ক্রিকেটের বাইরে আরও বিভিন্ন খেলাধুলায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নেওয়ার আগে এবি জাতীয় অনুর্ধ্ব-১৯ ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। আফ্রিকান জাতীয় হকি এবং সোকার দলের খেলোয়াড়দের তালিকায় ছিলেন তিনি। তাছাড়া আফ্রিকান জুনিয়র রাগবি দলের অধিনায়ক ছিলেন ভিলিয়ার্স। তবে সবদিক বিবেচনা করে ক্রিকেটকে অনেক সৌভাগ্যের তালিকায় রাখা উচিত, কারণ এবিডি ভিলিয়ার্সের মত ব্যাটসম্যান পাওয়াটা ক্রিকেটের অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার।

৩. মোহাম্মাদ তৌকির:

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রিকেটার মোহাম্মাদ তৌকির নিজের দলকে ২০১৫ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে দিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু বাক্তিগত জীবনে তৌকির একজন ব্যাংকার। এই আমিরাতের ক্রিকেটার ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর আবার তাঁর পুরনো পেশায় ফিরে যেতে চান।

৪. ব্রাড হজ:

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যবান ক্রিকেটারের নাম ব্রাড হজ। দল বাইরে অসাধারণ পারফর্ম করার পর কিছুদিন দলে সুযোগ পাওয়ার পর আবার দল থেকে বাদ পরেছেন। তবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) নিজের দক্ষতা দেখিয়ে খেলে চলেছেন। হজ ক্রিকেটে আসার আগে অনেক কষ্ট করে জীবন যাপন করেছেন, ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করার সময় এবং পরেও বেশ কিছুদিন তিনি স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে কাজ করতেন।

৫. শেন বন্ড:

ক্রিকেটের গতি দানবদের কথা আসলেই নাম আসে নিউজিল্যান্ডের গতিদানব ও অন্যতম সফল বোলার শেন বন্ডের। ইনজুরি কোন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিলে এই ক্রিকেটার তাদের মধ্যে একজন। শেন বন্ড দলের পক্ষে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরুর আগে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। পরে দলে ফিরলে দেশের হয়ে পেশাটা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না হলেও বর্তমানে তিনি নিউজিল্যান্ডের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।

৬. ন্যাথান লিওন:

অস্ট্রেলিয়া বর্তমান দলের স্পিনারদের মধ্যে প্রথম যদি নজরে আসে তো সেই বোলার হলেন ন্যাথান লিওন। দলে সুযোগ পাওয়ার আগে মাঠের সাথেই সংযুক্ত ছিলেন তিনি, তবে খেলোয়াড় হিসেবে নয় স্টেডিয়ামের মাঠকর্মীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। মজার তথ্য হল, যে এডিলেডের মাঠ পরিচর্চার কাজে ছিলেন তিনি, সেই এডিলেডেই আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারের গোড়াপত্তন করেছেন ন্যাথান লিওন।

৭. ডুয়াইন ল্যাভারক:

বারমুডার ক্রিকেটার ডুয়াইন ল্যাভারক ক্রিকেট মাঠের সবথেকে শারীরিক ওজনধারী ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত। ল্যাভারক ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে বারমুডা দলের পক্ষে খেলেছিলেন। ১২৭ কেজি ওজনের এই ক্রিকেটার বাক্তিগত জীবনে একজন পুলিশ হিসেবে কাজ করেন এবং পুলিশের কারাবন্দীদের গাড়ি বহর নিয়ে বহনের মত কাজটি তিনি করতেন।

৮. ইয়ান চ্যাপেল:

চ্যাপেল ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে বড় ভাই ইয়ান চ্যাপেল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটারের নাম। কিন্তু অনেকেই হয়ত জানেন না যে ইয়ান চ্যাপেল অজি দলে ১৯৬৪ এবং ১৯৬৬ সালের মধ্যে দুইবার দলের জন্য সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে মজার তথ্য হল চ্যাপেল টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার আগে একজন নামকরা বেজ বল খেলোয়াড় ছিলেন।

৯. দীপক ছুদাসামা:

কেনিয়া দলের সাবেক ক্রিকেটার দলের হয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতেন। কেনিয়া জাতীয় দলের হয়ে দীপক দুইবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ দলের সাথে খেলেছিল। তবে ক্রিকেটের বাইরে টেবিল টেনিসে অনেক পরিপক্ক খেলোয়াড় ছিলেন তিনি, এমনকি কেনিয়ার পক্ষে ১৯৮২ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে টেনিস তারকা হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১০. জো ডোয়াস:

ভারতীয় বোলিং কোচের দায়িত্বে থাকা অস্ট্রেলিয়ান বোলার জো ডোয়াস বাক্তিগত জীবনে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। ওয়ালপ নামে পরিচিত জো ক্রিকেটে থাকা কালীন অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একজন অফিসার ছিলেন। তাছাড়া তিনি অজিদের পক্ষে তিনি একজন ডানহাতি পেসার ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই