জেনে নিন গাজীপুরের সেরা ৫ রিসোর্টের খোঁজখবর

ঘুরতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই ভার! কর্মব্যস্ত জীবনে একটু প্রশান্তি পেতে সবাই ছুটে যায় কোন সবুজের প্রান্তরে। কিন্তু ব্যস্ত এই জীবনে মানুষের এত সময় কোথায় দূরে হারিয়ে যাওয়ার? তাই ইচ্ছা থাকলেও সময়ের অভাবে অনেক সময় দূরে কোথাও যাওয়া হয়ে উঠে না। অল্প সময়ে যদি সবুজের সান্নিধ্য পাওয়া যায় তবে কেমন হয়? দারুন, তাই না! অল্প সময়ে ঘুরে আসতে পারেন রিসোর্টগুলোতে। খুব বেশি দূরে যেতে না চাইলে ঢাকার খুব কাছে গাজীপুর থেকে ঘুরে আসতে পারেন। ঢাকার অদূরে গাজীপুরে গড়ে উঠেছে দারুন কিছু রিসোর্ট। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ গ্রামীণ পরিবেশে কয়টা দিন কাটিয়ে আসতে পারেন।

১। রাঙামাটি-ওয়াটার-ফ্রন্ট

নাম শুনেমনে হচ্ছে, এত দূর রাঙামাটি যাব! নাম রাঙামাটি হলেও এই রিসোর্টের অবস্থান ঢাকার গাজীপুরে। গাজীপুরে রাঙামাটি গ্রামের নাম অনুসারে এই রিসোর্টের নামকরণ করা হয়েছে রাঙামাটি-ওয়াটার-ফ্রন্ট। গাজীপুরে চন্দ্রায় অবস্থিত মনমুগ্ধকর রিসোর্ট এবং পিকনিক স্পট এটি। রাঙমাটির নামনুসারে রাখা হলেও রাঙমাটির মত পাহাড়ের দেখা না মিললেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কমতি নেই। এখানে ৪টি পিকনিক স্পট আছে যার নাম যথাক্রমে কামিনী, যামিনী, বিজ ফ্লিড, ও এমফি থিয়েটার। প্রতিটি স্পটে আছে আলাদা আলাদা খেলার মাঠ। এখানে সাতটি কটেজ এবং আটটি দোতলা ভবন আছে। প্রতিটি কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।প্রতিটি সিঙ্গেল কটেজের ভাড়া ৫০০০ টাকা আর ডিলাক্স স্যুটের ভাড়া ৬০০০ টাকা। এখানে সব ধরণের খাবারের সাথে তন্দুরি এবং কাবাবও পাবেন।

কিভাবে যাবেন:

মহাখালী বা ফার্মগেট থেকে বাসে করে যাবেন চন্দ্রায়। তারপর চন্দ্রায় থেকে টেম্পো বা রিকশা করে টাঙ্গাইল রোড ধরে যেতে হবে রাঙমাটি-ওয়াটার-ফ্রন্ট।

যোগাযোগ:

বুকিংঅফিসঃ

ফ্ল্যাট # ৬০২, কনকর্ড টাওয়ার, ১১৩কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, বাংলামটর, ঢাকা।

ফোন : ০১৮১১৪১৪০৭৪, ০১৮১১৪১৪০৮০, ০২-৯৩৪১০৮৬

এছাড়াও যোগাযোগ করতে পারেন তাদের ওয়েবসাইটে।

২। নক্ষত্রবাড়ী

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় রাজবাড়ি এলকায় শিল্পীদম্পতি তৌকির-বিপাশা গড়ে তুলেছেন নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টটি। প্রায় ২৫ বিঘার জমির ওপর তৈরি এই রিসোর্টটি।শালবনের পাশে আধুনিক এ রিসোর্টে বেশ কয়েকটি কটেজ ছাড়াও আছে দিঘি, কৃত্রিম ঝরনা, সভাকক্ষ, সুইমিংপুলসহ নানান সুবিধা।এখানে পুকুরের ওপরে আছে নানা আকারের কুঁড়েঘর।যার ভেতরে আপনি পাবেন আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। এই কুঁড়েঘরের বারান্দায় বসে আপনি শুনতে পাবেন ব্যাঙের ডাক, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, চাইলে হারিয়ে যেতে পারবেন মায়াবী জোছনায়। এখনে বাচ্চাদের ছবি আকাঁর ব্যবস্থা রয়েছে।আছে ছবি প্রদশনীর ব্যবস্থাও। খাবারের ব্যবস্থা হিসেবে আপনি পাবেন বাংলা, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, থাই, কন্টিনেন্টাল খাবার।

কিভাবে যাবেন:

বাসে বা নিজস্ব পরিবহনে যেতে পারেন নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টে। বাসে করে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে ঢাকা-কাপাসিয়া মহাসড়কের রাজাবাড়ী বাজারে যাবেন। পরে সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে চিনাশুখানিয়া গ্রামের বাঙালপাড়া। এই বাঙালপাড়ায় অবস্থিত নক্ষত্রবাড়ীর যা কাপাসিয়া-শ্রীপুরের সীমানা বেষ্টিত এলাকা।

যোগাযোগ:

৯৮৩৫১৭৩

০১১৯২১৫০৫৬৩, ০১৭৭১৭৯৯৪১০

৩।উৎসব রিসোর্ট

ঢাকা থেকে মাত্র ৫২ কিলোমিটার দূরে উৎসব রিসোর্টটি অবস্থিত। গাজীপুর জেলার হোতাপাড়া এলাকায় ব্যক্তি মালিকানায় ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে এই রিসোর্টটি। ১২ বিঘা জমির উপর অবস্থিত এ স্পটের ৪টি কটেজের মধ্যে ৩টি কটেজই পিকনিক পার্টির জন্য উন্মুক্ত। গ্রামীণ পরিবেশে ফুল ও ফল গাছে সাজানো উৎসব পিকনিক স্পটটি পিকনিক কিংবা পারিবারিক ভ্রমণে সবারই ভাল লাগবে। এখানে এসি এবং নন এসি সহ মোট ১৫টি রুম আছে। রিসোর্টে দুইটি সুইমিংপুল, একটি জিম হেলথ ক্লাব, একটি ম্যাসেজ পার্লার, একটি রেস্টুরেন্ট, একটি বেকারী, একটি বার ও দুইটি ডিসকো ব্যবস্থা আছে। এছাড়া সব ধরণের খেলার সুবিধা পাবেন এই রিসোর্টে।

কিভাবে যাবেন:

উৎসব রিসোর্ট যাওয়া খুব বেশি কঠিন নয়। ঢাকা থেকে শ্রীপুরগামী বাসে হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ড নেমে সহজে যাওয়া যায় এই রিসোর্টে।

যোগাযোগ-

২৭৮/এ, এলিফ্যান্টরোড, ঢাকা- ১২০৫

০১৭১৩-০১৪৪৫৯১

০২- ৮৬২৬৩৭৬, ৯৬৬৩৬৭, ৮৮২৫৩৩৫

৪। ছুটি রিসোর্ট

গাজীপুরে যে কয়টি রিসোর্ট আছে তাদের মধ্যে ছুটি অন্যতম। গাজীপুরে সুকুন্দি গ্রামে ৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই রিসোর্ট। রিসোর্টের গা ঘেঁষে রয়েছে গভীর জঙ্গল।আছে দুটো বড় মাঠ,অসংখ্য গাছ আর আছে বিশাল একটা দিঘী। এতে ফুটে আছে লাল পদ্ম আর ঘাটে বাঁধা আছে দুটি নৌকা। আপনি চাইলে সম্পূর্ণ গ্রামীণ আমেজে থাকতে পারবেন।আবার যদি চান তবে পাবেন ইট কাঠ বালুর কটেজ। এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক দেখতে পাওয়া যায় পূর্ণিমাতে। রিসোর্টের নিয়ম অনুসারে ভরা পূর্ণিমা বা চাঁদনী রাতে বিদ্যুতের আলো জ্বালানো হয় না আপনি যদি ভরা পূর্ণিমা এবং রিমঝিম বর্ষা উপভোগ করতে তবে ছুটি রিসোর্টই হবে সবচেয়ে উপযুক্ত।এখানে খাবার হিসেবে সকালে পরিবেশন করা হয় চালের নরম রুটি অথবা চিতই পিঠা, সঙ্গে দেশী মুরগির তরকারি, সবজি ও ডাল ভুনা।গরম গরম চা অথবা কফি।

কিভাবে যাবেন:

গুলিস্তান, মহাখালী থেকে বিআরটিসি কিংবা যেকোন বাসে করে যাবেন গাজীপুর শহরে। তারপর সেখান থেকে রিকশা করে যাবেন আমতলী বাজারে। আমতলী বাজারের পাশেই দেখতে পাবেন ছুটি রিসোর্ট।

যোগাযোগ:

রুপসা টাওয়ার বাড়ি নং: ০৭,ফ্ল্যাট নং: ১৩ এ, ব্লক সি,রোড নং ১৭,বনানী

০১৭৭৭১১৪৪৮৮

০১৭৭৭১১৪৪৯৯

যোগাযোগ করতে পারেন তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও।

৫। গ্রীনটেক রিসোর্ট

২০১০ সালে গাজীপুরে জেলার ভবানীপুরে প্রায় ৬ একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত গ্রীনটেক রিসোর্ট।এখানে রয়েছে ৭৩টি রুম, একটি অডিটেরিয়াম, দুটি কনফরেন্স রুম, একটি সুমিং পুল, দুটি ডায়নিং হল, আর দুটি পুকুর। সম্পূর্ণ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত এখানে রয়েছে ইনডোর, আউটডোর গেমের সকল সুবিধা। পুরো রিসোর্টটি রয়েছে ওয়াই ফাই সংযোগ। এখানে সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে সর্বচ্চো দশ হাজার টাকা পর্যন্ত রুম ভাড়া পাওয়া যায়।

যোগাযোগ:

হোটেল রেডিয়াল প্যালেস,

রোড-৮, ব্লক-সি,

বনানী, ঢাকা।

ফোন: ০১৭১৫১০৫৭৭০

ইচ্ছে হলে গ্রিনটেক রিসোর্টের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও যোগাযোগ করতে পারেন।



মন্তব্য চালু নেই