জেনে নিন ডিএসএলআর লেন্সের প্রকারভেদ

ভালো ছবি তোলার জন্য ভালো ক্যামেরার কোন বিকল্প নেই। ক্যামেরার জগতে এখন পর্যন্ত রাজত্ব করে যাচ্ছে ডিজিটাল সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্ট বা ডিএসএলআর ক্যামেরা। ডিএসএলআর ক্যামেরার অপরিহার্য অংশ হলো লেন্স। একেক ধরণের ছবি তোলার জন্য একেক ধরণের লেন্স ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ডিএসএলআর ক্যামেরার সাথে উপযুক্ত লেন্স ব্যবহার করলে ছবি হবে আরও প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয়। জেনে নেয়া যাক কোন লেন্সের কী কী কাজ।

স্ট্যান্ডার্ড জুম লেন্স :
ডিএসএলআর ক্যামেরা দিয়ে সাধারণ ছবি তোলার জন্য এসব লেন্স ব্যবহার হয়ে থাকে। এসব লেন্স দিয়ে ১৮ মিলিমিটার থেকে ১৩৫ মিলিমিটার দুরত্বের নিখুঁত ছবি তোলা যায়। এই লেন্স সাধারণত ডিএসএলআরের বডির সাথে নির্দিষ্ট লেন্স হিসেবে পাওয়া যায়। ১৮ থেকে ৫৫, ১৬ থেকে ৮০, ১৮ থেকে ১০৫ মিলিমিটারের হয়ে থাকে। এসব লেন্সের ফোকাল লেন্থ ৩.৫ থেকে ৫.৬ এবং ৪ থেকে ৫.৬ হয়ে থাকে। ফটোগ্রাফি শেখার জন্য এই লেন্স গুলো উত্তম। এছাড়া এই লেন্স গুলো দিয়ে ওয়াইড এবং টেলি জুমের প্রাথমিক পর্যায়ের ছবিগুলো তোলা যায়।

প্রাইম লেন্স : প্রোট্রেট বা ক্লোজ ছবি তোলার জন্য প্রাইম লেন্সের জুড়ি নেই। স্ট্যান্ডার্ড লেন্স ব্যবহার শেখার পর প্রাইম লেন্সে ছবি তুললে অসাধারণ ছবি তোলা যায়। স্বল্প আলোতে ছবি তোলা, বোকেহ, ক্লোজআপ শট এবং প্রোট্রেট ছবি তোলার জন্য উত্তম লেন্স এটি। এই লেন্স দিয়ে সাবজেক্টের ব্যাকগ্রাউন্ডকে ব্ল্যার করে দেয়া যায়। কয়েকটি ফরম্যাটে প্রাইম লেন্স পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৩৫,২৪,৫০ এবং ৫৫ মিলিমিটার উল্লেখযোগ্য। এই লেন্সগুলোর অ্যাপারচার ১.৮,১.৪,১.২ এবং ১ হয়ে থাকে।

ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স : এই লেন্সগুলো প্রাইম লেন্সের মতোই। তবে এতে কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। লেন্সের প্রকারভেদ অনুসারে ফিক্সড অ্যাপারচারের লেন্স হয়ে থাকে এগুলো। এই লেন্সগুলো দিয়ে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ভিউ এবং যে কোন ক্ষুদ্র অংশ ফোকাস করে ছবি তোলা যায়। ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সগুলো সাবজেক্ট, ফোরগ্রাউন্ড এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের বিবর্ধক হিসেবে সুবিধা প্রদান করবে। এই লেন্স দিয়ে গ্রুপ ছবি, স্থাপত্য এবং ল্যান্ডস্কেপ ছবি তুললে ছবির মান ভালো থাকে। এই লেন্স গুলো ২২ এবং ২৪ মিলিমিটার হয়ে থাকে। লেন্সগুলোর ফোকাল পয়েন্ট এফ বাই ২ অথবা ২.৮ হয়ে থাকে।

টেলিফটো জুম : নামের সাথে যেহেতু জুম আছে সেহেতু বোঝা যায় দূরের ছবি তোলার জন্য লেন্সগুলো ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক দূর থেকে এই লেন্সের মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু অথবা পুরো বিষয়বস্তু পরিস্কারভাবে ধারণ করা যায়। অন্যান্য লেন্সের তুলনায় এই লেন্স গুলো বৃহৎ এবং অধিক ওজনের হয়ে থাকে। এই লেন্সগুলো খেলাধুলা এবং ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফির জন্য উত্তম। সংকীর্ণ ডেপথ অব ফিল্ড থাকলে এই লেন্স দিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড অথবা ফোরগ্রাউন্ডকে ব্লার করে ছবি তোলা যায়। এই লেন্স গুলো ৫৫ থেকে ২৫০ অথবা ৭০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার দুরত্বের হয়ে থাকে। ক্যামেরায় এই লেন্স লাগিয়ে ছবি তোলার ক্ষেত্রে ট্রাইপড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সুপার জুম লেন্স : এই জুম লেন্স গুলো কাছের বস্তু তোলার সাথে সাথে দুরের বস্তুও তোলা যায়। সাধারণত পারিবারিক অনুষ্ঠান বা কোন হলের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার জন্য এই লেন্সগুলো উত্তম। এই লেন্সগুলো ১৮ থেকে ২০০ মিলিমিটারের মধ্যে হয়ে থাকে। এই লেন্স দিয়ে মোটামুটি সব ধরণের ছবি তোলা যায়। এই লেন্সগুলোর অ্যাপারচার ২.৮ থেকে ৪-৫.৬ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ম্যাক্রো লেন্স : ১:১ রেশিওর ছবি তোলার জন্য উত্তম লেন্স হলো ম্যাক্রোলেন্স। এই লেন্সগুলো ফুল, পোকামাকড় সহ যে কোন বস্তুর কাছাকাছি ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই লেন্সগুলোর ইমেজ শার্পনেস চমৎকার এবং খুব সুক্ষ ডেপথ অব ফিল্ড রয়েছে। যার কারণে ছবির বিষয়বস্তু পুরোপুরি নিখুঁত থাকে। এই লেন্সগুলো ২৪,৮৫,৬০ থেকে শুরু করে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই লেন্সগুলোর ফোকাল পয়েন্ট ৩.৫ থেকে ২.৮ পর্যন্ত হয়।



মন্তব্য চালু নেই