জেনে নিন পয়সা নিয়ে ৫ সফল ব্যক্তির আক্ষেপ ও পরামর্শ

বিষয়টি যখন ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থাপনা, তখন জ্ঞানই সবকিছু। যত বেশি জানবেন, তত বেশি সুষ্ঠু অর্থব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। এখানে পাঁচজন সফল মানুষ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আপানাদের সঙ্গে। তাদের আক্ষেপ এই শিক্ষা যদি আরো আগে পেতেন, তবে আরো বহুদূর এগিয়ে যেতে পারতেন।

১. ‘আগে যদি জানতাম আমি অপচয়কারী’ : গ্রিনভিলের স্যাভিং ফ্রিক ডট কমের ব্লগার পল ময়ের (৩৮)। জানান, আমি স্বভাবগতভাবে খরুচে নই। আগে কলেজ জীবনে কত অর্থ অপচয় করতাম তা পরে বুঝতে পারি। বন্ধুদের নিয়ে ঘন ঘন বাইরে ঘুরতে যাওয়া বা ভিডিও গেমে কেনা ইত্যাদি কাজে প্রচুর পয়সা খরচ হয়ে যায়। একটা সময় ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়ি। পরে বিবাহিত জীবনে দুজন মিলে অর্থ বিষয়ক ঝামেলা দূর করতে পরিকল্পনা করি। পলের পরামর্শ হলো, অর্থব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু করতে কোনো না কোনো অভিজ্ঞজনের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এগুলো আগে থেকেই জানতে পারলে পরবর্তিতে হতাশা কাজ করবে না।

২. ‘ঋণের ওপর নির্ভরতা দীর্ঘমেয়াদে কি ঘটায় তা যদি জানতে পারতাম’ : ২৮ বছর বয়সী মার্কেটিং ডিরেক্টর ড্যানিয়েছে টোস্ট এ কথা বলেন। পরিবারের অর্থ বিষয়ক আলোচনায় ছোটদের রাখা হয় না। ফলে তাদের নিচের প্রচেষ্টায় শিখে নিতে হয়। আমি মাত্র ১৮-তেই ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ি। এখান থেকে বের হয়ে আসা কঠিন এক বিষয়। এখন বুঝতে পারি ঋণের ওপর নির্ভরতা ভবিষ্যৎ জীবনে কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই তার উপদেশ হলো, যাই ঘটে যাক না কেন, অতি জরুর কাজে অর্থ ঢালার কাজটা আগে সারতে হবে। আর ঋণ নিলেও তা নিয়মিত অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে।

৩. ‘নিজের পয়সা খরচের আগে যদি বিনিয়োগের মৌলিক শিক্ষা নিতাম’ : নিউ ইয়র্কের ফিনানসিয়াল উদ্যোক্তা জর্জ অ্যালেক্স পোপেস্কুর আক্ষেপ এখানেই। বিশেষ কোঠায় পকেটের পয়সা দিয়ে কিছু বিনিয়োগ করেন তিনি। পুরো বোকার মতো কাজটা করেছিলেন এবং পরবর্তিতে তা বুঝতে পারেন। কম বয়সে বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই বিনিয়োগের মৌলিক শিক্ষাগুলো অর্জন করতে হবে। সফলতার সম্ভাবনা ও ঝুঁকির মাত্রা সম্পর্কে না জেনেই বিনিয়োগ করাতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। জর্জের পরামর্শ হলো, বিনিয়োগের আগে হোমওয়ার্কের কাজ অবশ্যই করতে হবে। ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় আনতে হবে। বিভিন্ন মেয়াদে এর রিটার্ন সম্পর্কেও বুঝতে হবে। আর পরামর্শ দাতাদের সঙ্গে কথা না বলে কিছুই করা উচিত নয়।

৪. ‘যদি আরো আগে থেকে সঞ্চয় করতাম’ : তার্পুন স্প্রিংস-এর কাস্টমার সার্ভিস স্পেশালিস্ট তারা কুরি এ কথা জানান। স্কুলে থাকতেই একটি গ্রোসারি শপে চাকরি পেয়ে যান। তার অভিভাবকরা সঞ্চয়ের পরামর্শ দিতেন। বলতেন, আয়ের ১০ শতাংশ জমানো উচিত। কিন্তু এখন আক্ষেপ হয়, তাদের কথা শুনলে প্রচুর পয়সা আজ থাকতো তার কাছে। ৩৪ বছর বয়সী এই নারী জানান, অবশেষে ৫ বছর আগে থেকে সঞ্চয় শুরু করি। তিরিশে পা দিয়ে সঞ্চয়ের হিসাব দেখে কিছুটা ভালো লাগলো। এ কাজ যদি আরো থেকে করতাম, তবে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। তার সেরা পরামর্শ হলো, ঋণ থাকলেও সঞ্চয়ের কাজ করে যাওয়া উচিত। খুব দ্রুত এর সুফল পেতে শুরু করবেন। অর্থ আসে আর যায়। কিন্তু একমাত্র সঞ্চয়ই আপনার সম্পদ হিসাবে গণ্য হবে।

৫. ‘মাসের খরচের বাইরে বাজেট তৈরি যদি শিখতে পারতাম’ : হতাশা ঝরে ৪৫ বছর বয়সী প্রকাশক ও লেখন জেনিফার ব্রাইট রাইখের কণ্ঠ থেকে। বলেন, প্রতিমাসে বাজেট ধরে চলতে হয় জানতাম। কিন্তু এই নির্দিষ্ট বাজেটের বাইরেও কিছু ঝামেলা আসে। আমি কঠোরভাবে বাজেট তৈরি করতাম। একমাস ঠিকঠাকমতো চলার পর পরের মাসে গিয়েই মাথা খারাপ হয়ে যেতো। প্রতিমাসেই বাজেট বদলাতে হতো। আসলে নির্দিষ্ট খরচ ছাড়াও যেকোনো সময় বাড়তি খরচের ঝক্কি আসতেই পারে।

এ বিষয়টি মাথায় কাজ করেনি তখন। অবশেষে বার বার ভুল করা ও শুধরানোর মধ্য দিয়ে শিখতে পারি কিভাবে সব সময়ের জন্যে একটি আদর্শ বাজেট তৈরি করা যায়। এ ক্ষেত্রে তার পরামর্শ হলো, যদি অর্থকে বলেন কোথায় যেতে হবে, তব আপনার পয়সা সে কথা শুনবে। খরচে নিয়ন্ত্রণ একমাত্র আপনার হাতেই রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই