জেনে রাখুন প্যারিসের টুকিটাকি

প্যারিস- সৌন্দর্যের দিক দিয়ে আর সব শহরকে হারিয়ে স্বগর্বে মাথা তুলে দাড়িয়ে থাকা ফ্রান্সের এই শহরটির ওপরে গত কিছুদিনে সন্ত্রাসের কালো এক ছায়া নেমে এলেও বাস্তবে সত্যিই পৃথিবীর সেরা শহর এটি। খাবার, স্থান, মানুষ- সবদিক দিয়ে পর্যটকদের কাছে প্রথম সারির এক পর্যটনস্থান হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছে শহরটি যুগ যুগ ধরে। কি নেই এখানে? তবে সত্যিকারভাবে এই প্রশ্নটির উত্তর জানতে হলে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে আসলে ঠিক কি কি আছে প্যারিসে। কেমন হবে যদি প্যারিসে ঘুরে আসার সুযোগ পান আপনি? কোন কোন স্থানে ঘুরবেন কিংবা কোন কোন খাবার অবশ্যই খাবেন? আসুন জেনে নিই প্যারিস সম্পর্কে এমনই কিছু টুকিটাকি কথা।

প্যারিসের সেরা পর্যটনস্থল গুলো

প্যারিসের ঘুরতে যাওয়ার স্থানগুলোর যদি একটা ছোটখাটো তালিকা করেন আপনি তাহলে সেটা হবে অনেকটা এরকম-

১. আইফেল টাওয়ার

প্যারিসকে বিশ্বের সবাই এক নামে চেনে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এর আইফেল টাওয়ার। এখানে বেড়াতে আসবার কথা চিন্তা করলেই প্রথমে চলে আসে আইফেল টাওয়ার দেখার ব্যাপারটা। তবে অদ্ভূত ব্যাপার হচ্ছে, আপনি প্যারিসে গেলে ইচ্ছে না করলেও আইফেল টাওয়ারকে দেখতে হবে আপনার। আর এর কারণ হচ্ছে শহরের যেখানটাতেই যাননা কেন আপনি টাওয়ারটি কোন না কোন দিক দিয়ে চোখের সামনে চলে আসে ( হিস্টরভিয়াস )।

২. দ্যা কাটাকম্ব

পৃথিবীর অন্যতম রহস্যময় আর আত্ঙ্কের নিদর্শন কাটাকম্বকেও দেখে আসতে পারেন আপনি প্যারিসে গেলে। প্রায় ছয় মিলিয়ন মানুষের খুলি আর হাড়-গোড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দ্যা কাটাকম্ব নামে প্যারিসের এই দালানটি। যেটাকে দূর থেকে দেখতে বেশ ভালো লাগলেও কাছ থেকে দেখলে চমকে উঠতে হয় খুব সহজে।

৩. ল্যুভর জাদুঘর

পৃথিবীর জাদুঘরগুলোর ভেতরে অন্যতম জাদুঘর ল্যুভরেও ঘুরে আসতে পারেন আপনি প্যারিসে এলে। এখনে একবার প্রবেশ করলে কেবল ল্যুভর দেখেই পুরোটা সময় কাটিয়ে দিতে পারবেন আপনি এ শহরে। বিশেষ করে একবার যদি মোনালিসার জাদুময় হাসির জালে আটকে যান তাহলে তো আর কথাই নেই!

৪. সেইন্ট চ্যাপেল গীর্জা

যদি ছোট্ট একটা আবহের ভেতরে পুরোদস্তুর সৌন্দর্যকে আকড়ে ধরতে হয়, ফুটিয়ে তুলতে হয় তাহলে সেটার জন্যে সেইন্ট চ্যাপল গীর্জাকে আদর্শ হিসেবেই মানতে হয়। কাঁচের তৈরি বিশাল এই গীর্জার রূপ সবসময়েই আকর্ষণ করবে আপনাকে। করবে মুগ্ধ। ১৩ শতকে তৈরি এই গীর্জাটি প্যারিসে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে একটি অন্যতম বড় আকর্ষণ বলে মনে করা হয় ( হিস্টরভিয়াস )।

তবে এ স্থানগুলো ছাড়াও প্যারিসে আপনি দেখে আসতে পারেন মিউজিয়াম ডি ক্লুনি, পেরে লেসাইজ সিমেট্রি, ভার্সেটাইল প্রাসাদ, নটরডেম ক্যাথেড্রাল, দ্যা প্যান্থিয়ন ইত্যাদি স্থানগুলো।

যে খাবারগুলো না চাখলেই নয়

প্রত্যেকটি দেশের আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যেগুলোর জন্যে অন্যদের চাইতে আলাদা হয় এটি। আর এদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই প্যারিসও। বিশেষ করে খাবারের দিক দিয়েও অন্যদের চাইতে বেশ ভিন্ন এটি। জেনে নিন প্যারিসে গেলে কোন খাবারগুলো অবশ্যই চাখতে ভোলা যাবেনা আপনার।

১. ম্যাকারুন

প্যারিসে গেলে যে জিনিসটি আপনার অবশ্যই খাওয়া উচিত সেটা হচ্ছে ম্যাকারুন। নানারকম রং এর এই খাবারটি তৈরি করতে দরকার পড়ে চিনি, বাদাম গুড়ো, ডিমের সাদা অংশ এবং খাবার রং ( এ্যাশলে অ্যাবরোড )। তবে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে একে অন্যের চাইতে আলাদা স্বাদের মাধ্যমে প্রত্যেকটি রং এর ম্যাকারুনই আপনার পুরো প্যারিস ভ্রমণকে করে তুলতে পারে স্বার্থক।

২. এসকারগট

শামুক খাওয়ার কথা হয়তো কখনোই ভাবেননি আপনি কিংবা ভালেও খেতে পারতেন না বাংলাদেশে। তবে প্যরিসে খুবই সহজলভ্য এই খাবার এসকারগট কিন্তু তৈরি হয় শামুক থেকেই ( সুইটসল্টিটার্ট )। প্রথমটায় মুখটা কুঁচকে গেলেও মাশরুমের মতন খেতে শামুকের সাথে নানারকম মশলা দ্রুত মাতিয়ে তুলবে আপনাকে এটা খুব সহজেই বলে দেওয়া যায়।

৩. প্যাটে

মাংসের সাথে চর্বি ও আরো নানারকম মশলাকে মিশিয়ে তৈরি করা প্যারিসের আরেকটি মুখরোচক খাবারের নাম হচ্ছে প্যাটে। রুটির মতন দেখতে এবং রুটির সাথে খাওয়া হলেও এমনিতেও খেতে পারেন আপনি এটা ( এ্যাশলে অ্যাবরোড )। আর এর স্বাদ? যতটা না শুনতে মনে হচ্ছে তার চাইতেও অনেকটা বেশি মুখরোচক এই খাবারটি।

এছাড়াও প্যারিসে গেলে মাসেলস, চেভরে চাউড, বোডিন নয়ের আর গেলেটে খেতেও ভুলবেননা যেন। কারণ এগুলোর বেশিরভাগই বাইরে খেতে পাওয়া গেলেও প্যারিসের রান্নার নিজস্বতা অনেকটাই ভিন্নমাত্রা যোগ করে খাবারগুলোতে।



মন্তব্য চালু নেই