জ্বীনের বাদশার প্রতারণার!

মোঃ রাজিবুল ইসলামঃ রাত গভীর হলেই মোবাইল ফোনে জ্বীনের বাদশা শিকারীর সন্ধ্যানে গ্রামঞ্চলের সরল-সোজা, খেটে খাওয়া মানুষকে কোটিপতি বানিয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা। এরা রাতের অপেক্ষায় থাকে কখন রাত গভীর হবে। রাত গভীর হলেই মোবাইলে রিং। ঘুম ভাঙ্গা আতংকিত নারী পুরুষ মোবাইল কানে দিলে শুনতে পায় ব্যতিক্রম কন্ঠের প্রতিধ্বনি। অপর প্রান্তে থেকে ভেসে আসে আস্ সালামুআলাইকুম। তারপর পরিচয় আমি জ্বীনের বাদশা বলছি। কম্পিউটারে রেকর্ড করা কম্পমান কন্ঠটি প্রতিধ্বনিত হয় কয়েক সেকেন্ড ধরে। তারপর ব্যতিক্রমী হেসে হেসে কিছুক্ষণ নিরবতা। আবার ভেসে আসা কন্ঠে “আমি তোর উপকার করতে চাই, তোকে ধন-সম্পদে সমৃদ্ধি করে দিতে চাই”। আবার কম্পমান কন্ঠে সালাম দিয়ে ফোন কেটে দিয়ে বিদায় নেয় পরে আবারো যেকোনো সময় কথা বলবে এই প্রতিশ্রুতি দেয়। এভাবে গভীর রাতে টার্গেট করে ফোন করা হয় বহু নারী-পুরুষকে। কাউকে ধনপতি বানিয়ে দেয়ার কথা বলে আবার কারো মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা করার কথায় আশ্বস্থ করে। জ্বীনের বাদশার ফোনে অনেকেই মুগ্ধ হয়ে তাদের প্রলোভনে পড়ে ইতিমধ্যেই সবকিছু হারিয়ে আজ মানবেতর জীবন যাপন করছে গ্রামঞ্চলের সরল-সোজা, খেটে-খাওয়া মানুষ। এমনিভাবে এবার জ্বীনের বাদশার প্রলোভনে পড়ে সর্বত্র হারিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের ৬২ নং আড়িয়া গ্রামের মাদ্রাসা পাড়ার ইলাম মল্লিকের ছেলে দিনমজুর লিখন। কয়েকদিন আগে গভীর রাতে ০১৯৯৩১৭১৯৩৫ নাম্বার থেকে জ্বীনের বাদশা পরিচয় দিয়ে লিখন ও তার স্ত্রীর নিকট মোবাইলে কথা বলে জৈনক প্রতারক। এ সময় কথিত জ্বীনের বাদশা তাদেরকে ৭ রাজার গুপ্তধন পাওয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে আজ ২ হাজার কাল ৫ হাজার এইভাবে প্রায় ৭০ হাজার টাকা দাবি করে। দিনমজুর লিখন গুপ্তধন প্রাপ্তির আশায় পাড়ার প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নগত টাকা ধার কর্য করে ও স্ত্রী স্বজনদের সোনার গহনা এবং গৃহস্থলি পশু-পাখি বিক্রি করে জ্বীনের বাদশার কথা মত ঘরের কোনে রাখার হাড়ী মাটিতে পুতে রেখে বিকাশে টাকা পাঠাতে চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন দোকানে যায়। কিন্তু বিকাশে টাকা পাঠিয়ে বাড়ি ফিরে দেখে যে হাড়ীতে গুপ্তধন আসার কথা তা ফাঁকা। তার পরই শুরু হয় লিখন ও তার স্ত্রীর কান্নাকাটি। এ ঘটনা গ্রামে জানাজানি হলে অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করেছে বিষয়টি নিয়ে। আবার কেউ বলেছে অতি লোভে যে তাতি নষ্ট হয় এটিই তার বড় প্রমান। সরকার যখন মোবাইল সিম রেজিষ্টেশনের আওতাভুক্ত। চুয়াডাঙ্গা সুযোগ্য পুলিশ সুপারের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছে ভুতভোগি লিখন, রেজিষ্টেশন মোবাইলের সিম নাম্বারের সুত্র ধরে প্রতারকের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এটাই এলাকাবাসীর দাবি। প্রতারক চক্র ধরা পড়লে প্রতরণার হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশ ও জাতি।



মন্তব্য চালু নেই