‘জয়ের অপকীর্তি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন শেখ হাসিনা’

প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে দেশে সজ্জন ভদ্রলোকদের বাস করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জয়ের একটি একাউন্টে আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর গুণধর পুত্রের গুণকীর্তন দেশে-বিদেশে যেভাবে প্রচার হচ্ছে তাতে মনে হয়, আওয়ামী তরী আর বেশিদিন পানিতে ভাসিয়ে রাখা যাবে না।’

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার শিবঃপীড়া এখন জয়কে নিয়ে। জয়ের অপকীর্তি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রী যখন কোন কিছু সামাল দিতে পারেন না, তখন অত্যাচার- হুমকি- উৎপীড়নের পথ ধরে বিরোধী পক্ষের ওপর ক্রমাগত বিষাক্ত আক্রমণ চালাতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর গুণধর পুত্রের গুণকীর্তন দেশে-বিদেশে যেভাবে প্রচার হচ্ছে তাতে মনে হয়, আওয়ামী তরী আর বেশিদিন পানিতে ভাসিয়ে রাখা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গত পরশু বলেছেন, ব্যবসা নয় মানুষের কল্যাণ করতে এসেছি। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ঠিকই বলেছেন, সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে- তিনি দেশের বারোটা বাজিয়ে জয়ের কল্যাণ করতেই অধিকতর সময় ব্যয় করছেন। কারণ, দেশের মানুষ এখনও শেয়ার বাজার লুটের টাকার হদিস পায়নি, দেশের ব্যাংকগুলোর লুটের টাকারও সন্ধান পায়নি। রাজকোষের রিজার্ভের চুরি হওয়া টাকা কিভাবে পাচার হল, তা কিন্তু জনগণের জানতে বাকি নেই।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় গত সোমবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে অশোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করেছেন। তিনি (জয়) তো এ ধরনের মন্তব্য করতেই পারেন। কারণ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চোরদের আপনার মা (শেখ হাসিনা) দেশপ্রেমিক খেতাব দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাওয়া হয়ে গেল। অথচ যে অর্থের পাহারাদার ছিলেন গভর্নর, সেই গভর্নরের বিদায়ে প্রধানমন্ত্রী কেঁদেছেন এবং সততার সার্টিফিকেট দিয়েছেন।’ৎ

তিনি বলেন, ‘যে ভোটারবিহীন সরকার চৌর্যবৃত্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন, বৈধতা দান করেন- সেই অবৈধ সরকার প্রধানের পুত্র যখন দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশোভন কথা বলেন, তখন মানুষ হতবাক হয়ে যায়। তার পারিবারিক সংস্কৃতি নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন চলে আসে।’

জয়ের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে (খালেদা জিয়া) সম্বোধন করাও তিনি শেখেননি। দেশের একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের পুত্র হিসেবে বিপক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রধানের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে যতটুকু ভদ্রতা প্রদর্শন করা দরকার, সেটির লেশমাত্রও তার মধ্যে নেই। জমিদারের বেপরোয়া তনয়ের মতো অসহিষ্ণুতা আর মানুষকে অবজ্ঞা করাই হচ্ছে তার স্বভাব। এই ছেলে যদি কখনো রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পায়, তাহলে সজ্জন ভদ্রলোকদের দেশে বাস করাই কঠিন হয়ে পড়বে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন-অর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক সেলিনা সুলতানা নিশীতা প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই