টমেটোর যে উপকারিতাগুলোর কথা জানা নেই আপনার

টমেটোকে সবজি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কিন্তু এটি আসলে সাইট্রাস ফল। টমেটো বহুমুখী গুণ সম্পন্ন একটি খাবার। আমরা জানি যে, টমেটো আমাদের জন্য উপকারী সবজি এবং ভিটামিন সি তে পরিপূর্ণ। টমেটোতে ক্যালোরি, কোলেস্টেরল ও সোডিয়াম খুব কম থাকে এবং এতে কোন ফ্যাট থাকেনা। এতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে বলে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু টমেটোতে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এমন আরো অনেক উপাদান আছে যা অনেকেই জানেননা। টমেটোর বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলোর কথাই জেনে নিব এই ফিচারে।

১। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

টমেটোতে নায়াসিন, ফোলেট এবং ভিটামিন বি ৬ থাকে। একারণেই টমেটো খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যে নারীরা সপ্তাহে ৭-১০টি টমেটো খান তাদের কার্ডিওভাস্কুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৩০% কমে, যে নারীরা এর চেয়ে কম খান তাদের তুলনায়।

২। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা অনেক বেশি টমেটো খান তাদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে। বিশেষ করে ফুসফুসের ক্যান্সার, পাকস্থলীর ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে। টমেটোতে লাইকোপিন থাকে বলে ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। টমেটো যদি সামান্য ফ্যাটের সাথে যেমন- অলিভ অয়েলের সাথে খাওয়া হয় তাহলে লাইকোপিন শরীরে খুব ভালো ভাবে শোষিত হয়।

৩। DNA এর ক্ষতি প্রতিরোধ করে

টমেটোতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে। এই ভিটামিনগুলো DNA কে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও টমেটো বয়স সংক্রান্ত রোগ যেমন- এথেরোস্ক্লেরোসিস এবং ডায়াবেটিস তাড়াতে সাহায্য করে।

৪। থ্রম্বোসিসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়

থ্রম্বোসিস হচ্ছে রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার একটি রোগ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, দিনে ৮ আউন্স টমেটোর জুস পান করলে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে। তবে এক্ষেত্রে কম সোডিয়াম যুক্ত টমেটোর জুস পান করতে হবে। কারণ সোডিয়ামের উচ্চ মাত্রা এই ধরণের রোগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৫। ইনফ্লামেশন কমায়

একটি ডাবল ব্লাইন্ড গবেষণায় দেখা গেছে যে, ১ গ্লাস টমেটো জুস পান করলে রক্তে TNF-alpha এর মাত্রা ৩৪% কমে। TNF-alpha ইনফ্লামেশন সৃষ্টির জন্য দায়ী।

৬। রক্তে চিনির মাত্রা কমায়

টমেটোতে খুব কম পরিমাণে শর্করা থাকে। কিন্তু ক্রোমিয়ামের ভালো উৎস টমেটো। যা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৭। চুলের জন্য উপকারী

চুলকে শক্তিশালী করতে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে টমেটো। টমেটোর ভিটামিন ও মিনারেল চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং pH এর ভারসাম্য রক্ষায় ও কাজ করে। এছাড়াও চুলের খুশকি কমতে সহায়তা করে টমেটো।

৮। হাড়ের জন্য ভালো

টমেটো আপনার হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। কারণ টমেটোতে ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম ও লাইকোপিন থাকে যা হাড়ের ভরের উন্নতিতে সাহায্য করে।

৯। সুস্থ ত্বক

অনেক দামী ফেসিয়াল ক্লিঞ্জারের একটি সক্রিয় উপাদান হচ্ছে লাইকোপিন। যা আপনি প্রাকৃতিক ভাবে পেতে পারেন টমেটো থেকে। তাই প্রাকৃতিক ভাবে আপনার ত্বক পরিষ্কারের জন্য টমেটোর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে তা আপনার মুখের ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ৫ মিনিট যাবৎ। এতে ত্বক পরিষ্কার হবে ও স্বাস্থ্যবান দেখাবে।

১০। কার্সিনোজেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে

টমেটোতে ক্লোরোজেনিক এসিড ও কৌমারিক এসিড থাকে যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কার্সিনোজেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে। দূষণকারী পদার্থ ও সিগারেটের ধোঁয়ায় পাওয়া যায় কার্সিনোজেন।

১১। দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে

টমেটোতে ভিটামিন এ ও সি থাকে যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে, রাতকানা রোগ এবং ছানি প্রতিরোধ করে। এতে ফাইটোকেমিকেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, জিয়াজেন্থিন, লুটেইন এবং লাইকোপিন ও থাকে বলে চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।



মন্তব্য চালু নেই