টাকার লোভে ছেলেকেই খুন করলেন মা!

টাকা যে মানুষকে পশু বানিয়ে ফেলে, তা এ ঘটনা পড়লে আপনিও হয়তো এর বিপক্ষে যাবেন না। কারণ কিছু টাকার লোভে ছেলেকেই খুন করে ফেললেন ‘মমতাময়ী’ মা! শুধু খুন করেই ক্ষ্যান্ত হননি, মৃত ছেলের নামে কুৎসাও রটিয়েছেন তিনি।

ভারতের পুনের রাখি বলপান্ডে নামে এক নারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগই উঠেছে। বিমার ১০ লাখ টাকার জন্য ঠাণ্ডা মাথায় ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে তিনি তার ছেলেকে খুন করেন। আর সেই কাজে তার সহযোগী ছিলেন প্রেমিক সুমিত মোরে। অভিযোগকারী আর কেউ নয়, খোদ রাখীর মা।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ১৩ বছরের নাতিকে হারিয়ে নিজের কু-সন্তানের বিরু‌দ্ধেই সোচ্চার হয়েছেন বৃদ্ধা নীলা মানকর। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে রাখি বলপান্ডে ও সুমতির মোরেকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

এদিকে শান্ত স্বভাবের ছেলে চৈতন্য বলপান্ডেকে হারিয়ে পাগল প্রায় বাবা তরুণ বলপান্ডে। তিনি নিজের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর কঠোরতম শাস্তি দাবি করেছেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে একি পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার বর্ণনায় জানান, প্রথমে ছেলেকে খুনের কথা অস্বীকার করেন রাখি। শেষপর্যন্ত জেরার মুখে ভেঙে পড়েন তিনি। প্রথমে ওই নারী নানা রকমের গল্প বানানোর চেষ্টা করেছিলেন। হত্যার কথা স্বীকার করার পরও নানা রকম গল্প বানান। এমনকি ছেলের বিরুদ্ধে বাজে কথাও বলেন তিনি। মৃত্যুর সঠিক কারণ ব্যাখ্যা করতে না পেরে পুলিশের কাছে রাখি বলেন- ছেলে তার দিকে কু-নজরে তাকিয়ে ছিল!

কয়েক বছর আগেই চৈতন্যর বাবা তরুণ বলাপান্ডের সঙ্গে রাখির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সম্প্রতি তার বাবার মৃত্যুর কারণ দেখিয়ে ছেলে চৈতন্যকে নিজের হেফাজতে রাখার অনুমতি চান রাখি। সেই আবেদন শুনে মায়ের কাছেই ছেলেকে রাখার অনুমতি দেন আদালত। তার মাঝেই অবশ্য ফ্ল্যাটের মালিক সুমিতের সঙ্গে রাখির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে নিজের ছেলেকে কোনোদিনই স্নেহ করতে পারেনি মেয়ে, তা জানিয়েছেন বৃদ্ধা নীলা।

তিনি জানান, নাতির জন্যই মেয়ের সংসারে থাকতেন তিনি। কিন্তু মা হয়ে কেউ সন্তানের উপর এমন অত্যাচার করতে পারে ভাবতে পারেননি তিনি। দিনে চার ঘণ্টা করে কঠোর শারীরিক কসরত্‍ করানো হতো আংশিক প্রতিবন্ধী চৈতন্যকে। অনেক দিনই পেটভরে খাবার দেয়াও হতো না তাকে। তারওপর ছিল ঘরের কাজ।

চোখের পানি মুছতে মুছতে নীলা জানালেন, তার নাতি খুব ভালো গান গাইতো। ইন্ডিয়ান আইডলেও অংশ নিয়েছিল। কিন্তু তার মেয়ে রাখি কখনো বিষয়টাতে গুরুত্ব দেয়নি। নাতিকে বাঁচাতে তাকে নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার কথাও বলেছিলেন নীলা। কিন্তু তখন রাখি হুমকি দিয়ে বলেন- এই কাজ করলে মায়ের বিরু‌দ্ধে অপহরণের অভিযোগ করবেন থানায়।

মৃত চৈতন্যর বাবা তরুণ জানান, ছেলেকে কাছে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তা আর হয়নি। বিবাহ বিচ্ছেদের সময় থেকেই রাখী তার কাছে ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। রাখীর চাপে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন ছেলের দশ লাখ টাকার বিমায় রাখীর নামটাও জুড়তে। আর সেই টাকার জন্যই ছেলেকে খুন করেছে রাখি।



মন্তব্য চালু নেই