টাকা ধার চেয়ে না পেয়ে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করা সভাপতি প্রত্যাহার

দেড় লাখ টাকা ধার চেয়ে না পেয়ে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আতাউজ্জামান রঞ্জু। এ ঘটনায় স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির পদ থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোপালরায় পঞ্চপথী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটার ঘটনায় অপর অভিভাবক সদস্য আব্দুল মতিনকেও প্রত্যাহার করেছে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনুর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি।

দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড গঠিত তদন্ত কমিটির দুই সদস্য হলেন বিদ্যালয় পরিদর্শক রবীন্দ্র নারায়ন ভট্টাচার্য এবং সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলাম।

এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন লালমনিরহাটের ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো. শাহীনুর আলম, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম।

কালীগঞ্জ ইউএনও শাহীনুর আলম জানান, ওই স্কুলের সভাপতি আতাউজ্জামান রঞ্জু ও অভিভাবক সদস্য আব্দুল মতিনকে প্রত্যাহার করেছে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড। ওই প্রত্যাহার সংক্রান্ত একটি বার্তা বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি পেয়েছেন বলে জানান।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাদ জানান, এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় থানায় ওই দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গ, গোপালরায় পঞ্চপথী উচ্চ বিদ্যালয়ের তহবিলে থাকা দেড় লাখ টাকা ধার হিসেবে চাচ্ছিলেন কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আতাউজ্জামান রঞ্জু।

প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম এভাবে টাকা ধার দিতে অপারগতা জানিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভায় বিষয়টি সমাধানের পরামর্শ দেন।

গত রোববার অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় চাহিদামত দেড় লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা ধার দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন কমিটির সভাপতি আতাউজ্জামান রঞ্জু।

পরে সেখানেই রেজ্যুলেশন বইয়ের কয়েকটি পাতা ছিঁড়ে ফেলে নিজের পায়ের জুতা খুলে সবার সামনে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করেন সভাপতি। এসময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নানাভাবে হুমকিও দিতে থাকেন বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ নিয়ে লালমনিরহাট জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরই আলোকে বুধবার দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের তদন্ত দল ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসেন।

একদিন পর বৃহস্পতিবার সেই আওয়ামী লীগ নেতা ও স্কুলের সভাপতি আতাউজ্জামান রঞ্জুসহ অপর অভিভাবক সদস্যকে শিক্ষাবোর্ড অব্যাহতি দেয় বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই