টাঙ্গাইলে অবৈধ ভারতীয় শাড়ি ও মাদক ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া এক শ্রমিকের গল্প

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ফুলচান নামক এক টেম্পু চালক অবৈধ ভারতীয় শাড়ি ও মাদকের ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। পুলিশ তাকে একাধিকবার আটক করলেও অজ্ঞাত কারণে আদালতের মুখোমুখি হতে হয়নি। এলাকাবাসী জানায়, কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের বলিখন্ড গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের পুত্র ফুলচান মিয়া(২৫) মাত্র ছয় বছর আগে বল্লা-এলেঙ্গা সড়কে টেম্পু শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। এরই মধ্যে এলেঙ্গার চেচুয়া গ্রামে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়ে বিয়ে করেন। যৌতুকের ওই টাকায় উপজেলার পৌজান বাজারে ‘মীম বস্ত্রালয়’ নামে একটি দোকান খুলে বসেন ফুলচান। দোকান দেয়ার পর পরই রাতারাতি পাল্টে যায় ফুলচানের জীবন-মান। এক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেন, তারই আতœীয় এলেঙ্গার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মফিজ। মফিজের হাত ধরে ফুলচান ইয়াবা, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের পাইকারি ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি শাড়ি কাপড়ের ব্যবসার আড়ালে ভারতের আমদানি নিষিদ্ধ শাড়ি এনেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দোকানে সরবরাহ করতে থাকেন। ইতিপূর্বে বিপুল পরিমানের মাদ্রক দ্রব্য নিয়ে ফুলচান ডিবি ও থানা পুলিশের হাতে একাধিকার গ্রেপ্তার হন। কিন্তু অলৌকিক ক্ষমতার বলে ছাড়া পেয়ে যান এওবং তাঁর অবৈধ ব্যবসা জোরদার করেন। ভারতীয় শাড়ির দাম কম অথচ লাভ বেশি হওয়ায় চাহিদা বেড়ে যায়। শাড়ির ব্যবসার আড়ালে মাদকদ্রব্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সহজে পৌঁছে দেয়ার লক্ষে তিনি একমাসে দু’টি পিকআপ ভ্যান কিনেন। ওই দু’টি পিকআপ ভ্যান দিয়ে পৌজান বাজারস্থ তার মীম বস্ত্রালয় থেকে আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় শাড়ি ও মাদকদ্রব্য উপজেলার বালিয়াটা, বল্লা, রামপুর সহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে থাকেন। এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনার জন্য সরকারিদলের স্থানীয় কতিপয় নেতাদের নগদটাকাসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করে রেখেছেন। গত ১২ অক্টোবর দুপুরে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ তার একটি পিকআপ ভ্যান ভারতীয় শাড়ি, ছোট কাপড় সহ আটক করে। এ সময় ফুলচান মিয়া(২৫) ও তার সহযোগী কালিহাতী উপজেলার মালতী গ্রামের আশকর আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম(২৫) কে আটক করে। অজ্ঞাত কারণে পুলিশ ফুলচান মিয়াকে ছেড়ে দিয়ে আশরাফুল ইসলামকে পিকআপ ভ্যান সহ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার(কালিহাতী থানার ডাইরি নং-৫৬০, তাং-১২/১০/১৫ইং) দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালিহাতী থানা পুলিশের এএসআই সামিউল ইসলাম এেেলঙ্গা-বল্লা রোড় থেকে ফুলচান, আশরাফুল ইসলামকে ইয়াবা, বিক্রি নিষিদ্ধ ভারতীয় শাড়ি, সিরামিকসের প্লেট, ছোট কাপড় সহ পিকআপ ভ্যানটি আটক করে। পরে ফুলচানকে অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দিয়ে আশরাফুল ইসলামকে পিকআপ ভ্যানসহ থানায় নিয়ে যায়। পৌজান ও বালিয়াটা বাজারের একাধিক বস্ত্রালয়ের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা দীর্ঘদিন ব্যবসা করলেও ফুলচানের মত নই। সে আলাউদ্দিনের চেরাগ পাওয়ার মতো ফুলে-ফেপে উঠছে। ভারতীয় শাড়ি ও মাদক ব্যবসা করেই সে রাতারাতি পরিবর্তন হচ্ছে বলে তারা বিশ্বাস করেন। থঅনা পুলিশও তাকে কিছু বলে না, বরং আটক হলেও ছেড়ে দেয়।



মন্তব্য চালু নেই