টাম্পাকো ট্র্যাজেডি: মালিককে না পাওয়ায় তদন্তে বিঘ্ন

গাজীপুরের টঙ্গীতে প্যাকেজিং কারখানা টাম্পাকো ফয়েলসে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এক সপ্তাহেও নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। বাহিনীটির কর্মকর্তারা অনুসন্ধান কাজ শুরু করলেও এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।

তদন্ত দলের প্রধান ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) বদিউজ্জামান বলেন, তাদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তবে ঈদের ছুটির কারণে এখন পর্যন্ত কেবল বৃহস্পতিবার এক দিন অনুসন্ধান চালানো গেছে। আগামী সপ্তাহে পাঁচটি কার্যদিবস আছে, এই সময়েও বলার মত অগ্রগতির হবে বলে আশা আছে বদিউজ্জামানের।

এই এক দিনের অনুসন্ধানে সিদ্ধান্তে আসার মতো তথ্য পাওয়া যায়নি জানিয়ে বদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, উদ্ধারকর্মী এবং স্থানীয় কয়েকজনের জবানবন্দি নিয়েছি।’

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলা। কিন্তু কারখানার মালিক বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে কারখানার ভেতরের নকশা ও আনুষঙ্গিক নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এটাই তদন্তের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে রয়েছে এখন পর্যন্ত।

গত শনিবারে ভোর ছয়টায় টাম্পাকো বিস্ফোরণের পর থেকেই কারখানার মালিক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মকবুল হোসেন গা ঢাকা দেন। বহু চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি প্রশাসনের কর্মকর্তারা। কেবল একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে তিনি টেলিফোনে কথা বললেও অন্য কারো সঙ্গে কথা বলেননি।

টাম্পাকোয় বিস্ফোরণ ও আগুনে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও বেশ কয়েকজন। এখন পর্যন্ত ১০ জনের বেশি নিখোঁজের নাম পেয়েছে প্রশাসন।

বিস্ফোরণে লাগা আগুন নিভে গেলেও ধসে পড়া কারখানা ভবনে উদ্ধার অভিযান চলছে এখনো। তাতে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী। তারা ধসে পড়া কারখানাটির বিভিন্ন অংশ কেটে সরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু ভেতরে দাহ্য রাসায়নিক থাকায় সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়া কারখানা ভবনের নকশা না পাওয়ায় কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। ফলে কাজের গতি বাড়ানো যাচ্ছে না।

দুর্ঘটনার পরপর প্রত্যক্ষদর্শীরা বয়লার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাতের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পরে শোনা যায় কারখানায় গ্যাসের লাইনে বিস্ফোরণের কথা।

টাম্পাকো অগ্ন্কিা-ের ঘটনা তদন্তে মোট চারটি কমিটি গঠন করা হয়। ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও গাজীপুর জেলা প্রশাসন, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর ও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) পক্ষ থেকেও আলাদা কমিটি করা হয়। এসব কমিটিকে পাঁচ থেকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের মত অন্য তদন্ত কমিটিও এখন পর্যন্ত সেভাবে কাজ শুরু করেনি পারেনি ঈদ ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে। টাম্পাকোর সামনে খোলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে মালিক সৈয়দ মকবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।



মন্তব্য চালু নেই