টার্গেট কিলিং আওয়ামী লীগই করছে : খালেদা

‘টার্গেট কিলিং পরিকল্পিত। এগুলো আওয়ামী লীগের লোকজনই করছে। এ কারণেই শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি জানেন এসব কারা করছে। কারণ তার দলের লোকরাই এসবের সঙ্গে জড়িত।`

বুধবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আয়োজিত ইফতারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেছেন, দেশে এর আগে কখনো এমন টার্গেট কিলিং ঘটেনি। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ সব ধর্মের মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে এটা পরিকল্পিত। আওয়ামী লীগের লোক এতে জড়িত। এই জন্যই হাসিনা বলেছেন আমি জানি। কিন্তু তিনি জেনেও এদের ধরেন না। এদের অনেককে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে এখন সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করছেন।

খালেদ জিয়া বলেন, দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব আছে কিনা বলা মুশকিল। এ অবৈধ সরকার সত্যিকার ক্ষমতায় থেকে দেশ শাসন করছে নাকি অন্য কোনো শক্তি পেছন থেকে কাজ করছে জনগণের মধ্যে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ঘরে বাইরে কোথাও মানুষ নিরাপদ নয় এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই নিরাপত্তাহীন, গণতন্ত্রহীণ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ ও গণতন্ত্র এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, সরকার প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যা করে দায় দিচ্ছে বিএনপির ওপর। অভিযানের নামে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কারাগারগুলোতে মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। বাথরুমেও মানুষ জায়গা পাচ্ছে না।

বিএনপি হত্যায় বিশ্বাস করে না এমন দাবি করে দলটির চেয়ারপারসন বলেন, ‘গণগ্রেফতারে এখন পর্যন্ত সাড়ে ১২ হাজারের মতো গ্রেফতার হয়েছে। ক্রসফায়ারে মারা গেছে ৫০ জন। এই কি দেশ চালানোর নমুনা?

খালেদা জিয়া বলেন, কোনো ধর্মের মানুষ আওয়ামী লীগের আমলে নিরাপদ নয়। হিন্দুদের ওপর এই সরকার সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করছে। বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। লুটপাট করছে।

রমজানে সবাইকে সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অচিরেই দেখবেন আওয়ামী লীগকে জনগণ কিভাবে বিতারিত করে। তাদের কি পরিণতি হয়।’

তিনি বলেন, অস্ত্র, সংঘাত নয়, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবে বিএনপি। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করবো।’

মূল মঞ্চে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান টিআই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, মহাসচিব মোস্তাফা জামাল হায়দার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মুর্তজা, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আমমেদ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ।

এছাড়া ইফতার মাহফিলে অংশ নেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ প্রমুখ।

নেতাদের মধ্যে আরও যারা অংশ নেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমদ আজম খান, সাবেক ছাত্রনেতা আতাউর রহমান ঢালী, মহিলা দলের সভাপতি নুরে আরা সাফা, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য সামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

২০ দলীয় জোটে নেতাদের মধ্যে আরও অংশ নেন- জামায়াতে ইসলামীর নেতা অ্যাডভোকেট মশিউল আলম ভূইয়া, শামীম বিন সাঈদী, জাগপার মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তাফা ভুইয়া, এনপিপির মহাসচিব মোস্কাফিজুর রহমান মোস্তফা, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব মো. আবুল কাশেম, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার একই স্থানে ২০ দলীয় জোট শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিবেন।



মন্তব্য চালু নেই