মন্দিরে হামলা ও প্রতীমা ভাঙচুর, মামলার আগেই বিএনপি নেতা আটক

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের পোকাতিপাড়ায় দুটি মন্দিরের দুটি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা দেখতে পারে লোকজন।

এদিকে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। প্রতিমা কারা ভাঙচুর করেছে তাও কেউ বলতে পারেনি। ওই ঘটনায় দুপুরে জুমার নামাজের পর নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পয়গাম আলীকে ডেকে নিয়ে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় লোকজন জানান, পোকাতিপাড়ায় দুর্গামন্দিরে বৃহস্পতিবার রাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। আজ শুক্রবার ভোরে এলাকার লোকজন দেখতে পান, মন্দিরের ভেতর থেকে প্রতিমা টেনে নিয়ে কে বা কারা ভাঙচুর করে ফেলে রেখেছে। এ সময় মন্দিরে একটি পোড়া বই পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই এলাকার পাশের একটি কালীমন্দিরে সেখানকার একটি কালীর মূর্তি ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়।

স্থানীয় লোকজন ঠাকুরগাঁও থানায় খবর দিলে পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার পর এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এলাকার লোকজন জানান, ঠাকুরগাঁও শান্তিপূর্ণ এলাকা। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।

পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ এলাকার মানুষকে দোষীদের ধরতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নাম পুলিশকে গোপনে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।

এদিকে গত ৩১ অক্টোবর নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পয়গাম আলী নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পরদিন পাশের জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ডোডাপাড়ার একটি বাঁশঝাড় থেকে পয়গাম আলীর সমর্থক মকবুল ওরফে মন্টুর (৫৫) হাঁটুভাঙা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মন্টুর বাড়ি নারগুন ইউনিয়নের কিসমত দৌলতপুর গ্রামে।

ওই ঘটনার পর পয়গাম আলী অভিযোগ করেন, মন্টুকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সরকারি দলের সমর্থক প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে।

বাঁশঝাড়ে কোমর পর্যন্ত উচ্চতায় ঝুলে থাকা মন্টুর লাশ দেখিয়ে স্বজন ও স্থানীয়রা দাবি করেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানিয়েছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বলা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। তবে হত্যাকাণ্ড হলে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে মন্টুর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আলাপ করার কথা বলে ওসি মশিউর রহমান আজ জুমার নামাজের পর পয়গাম আলীকে সদর থানায় ডেকে নেন। এরপর পয়গামকে জেলা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়।

সন্ধ্যায় ওসি মশিউর রহমান জানান, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় পয়গাম আলীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।



মন্তব্য চালু নেই