ডাকসু নির্বাচন : চ্যান্সেলরের নির্দেশ অমান্যের সুযোগ নেই

ডাকসু নির্বাচনের তাগিদ দেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)’র সাবেক ভিপি-জিএসরা রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে ‘দেরিতে হলেও ডাকসু নিয়ে কথা বলায়’ রাষ্ট্রপতিকে তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যেকোন মূল্যে ডাকসু নির্বাচন দিতে হবে। চ্যান্সেলরের চাওয়া মানেই নির্দেশ এবং এ নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই।

ডাকসুর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ ছাত্রসংসদগুলোর নির্বাচনও দিতে বলেছেন তারা। সাবেক ডাকসু নেতারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের সর্বস্তরে গণতন্ত্র নিশ্চিত করার তাগিদও দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে চ্যান্সেলর এবং রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ডাকসু নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘এই নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে।’

রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের পর নতুন করে ডাকসু নির্বাচনের দাবি আবারও আলোচনায় উঠে আসে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয় আলোচনা।

স্বাধীন বাংলাদেশে ডাকসুর প্রথম সহসভাপতি (ভিপি) মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, রাষ্ট্রপতি অনেক পরে হলেও ডাকসু নিয়ে মুখ খুললেন। তবুও তাকে ধন্যবাদ।

‘এখন চ্যান্সেলরের নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই,’ মন্তব্য করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি বলেন, ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, গণতান্ত্রিক ভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের নেতৃত্ব নির্বাচিত করুক।

ক্যালেন্ডারের একটি নির্দিষ্ট দিনকে ডাকসু নির্বাচনের জন্য নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী নিয়মিত নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত বলেও মনে করেন সাবেক এ ডাকসু ভিপি।

তিনি বলেন: যদি ওই নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির বিধান রাখা উচিত। প্রয়োজনে এই নিয়মকে আইনে রূপান্তর করা যেতে পারে।

ডাকসুর আরেক সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, স্বাধীনতার মূল চেতনা হচ্ছে গণতন্ত্র। কাজেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জরুরি।

‘ডাকসু নিয়ে আমরা বহুবার কথা বলেছি। কিন্তু ডাকসু নির্বাচন হয়নি। রাষ্ট্রপতি সঠিক ও ভালো কথা বলেছেন। দেশের সব জায়গাতেই গণতন্ত্র অনুপস্থিত। ডাকসুর পাশাপাশি সব জায়গাতেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে,’ বলে মন্তব্য করেন সাবেক এ আওয়ামী লীগ নেতা।

ডাকসুর সাবেক সাহিত্য সম্পাদক ও সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ বলেন, সামরিক শাসনের মধ্যেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকার ডাকসু নির্বাচন দিতে পারছে না।

‘ডাকসু নেই, অথচ এখনও ডাকসুর নামে টাকা সংগ্রহ চলছে, ডাকসু ভবন আছে, ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট চলছে, এতো বছর ধরে,’ বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

জাফর ওয়াজেদ বলেন, ডাকসুর অনুপস্থিতিতে ক্যাম্পাসে সরকার সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের একচ্ছত্র আধিপত্য চলছে। ‘আমাদের সময়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সহ অবস্থান ছিল। কিন্তু এখন ছাত্রলীগ ছাড়া আর কোন সংগঠনের আধিপত্য নেই,’ মন্তব্য করে সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ডাকসু নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহঅবস্থান নিশ্চিত করাও জরুরি।খবর চ্যানেল আই’র।



মন্তব্য চালু নেই